ডেস্ক: দেশে অল্প সময়ের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পাওয়া সেবার নাম ‘জাতীয় সেবা ৯৯৯’। এখানে ফোন করলেই পুলিশি সেবাসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা পৌঁছে যায় নাগরিকের হাতের নাগালে। পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভুক্তভোগীরা থানায় গিয়ে অভিযোগ করার চেয়ে ‘৯৯৯’ এ অভিযোগ জানাতেই বেশি আগ্রহী। জরুরি সেবার এই নম্বরে ভুক্তভোগীরা যেমন ফোন করে অভিযোগ করেন, আবার এমনও ঘটেছে চুরি করতে গিয়ে ধরা পরে পিটুনি খাওয়ার ভয়েও ফোন করে পুলিশি সেবা চাওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই সেবাটিতে অনেকে মজা করেও ফোন করছেন। আবার অনেকে মিথ্যা তথ্য দিয়েও বিভ্রান্তি করেছেন। জাতীয় এই সেবায় যোগাযোগ করে তাদের কাছ থেকে পাওয়া রেকর্ড ঘেঁটে দেখা গেছে, ৯৯৯-এ অপ্রয়োজনীয় ও মিথ্যা তথ্য দিয়েছে এমন কলের পরিমাণ মোট কলের অর্ধেকের বেশি। গত পাঁচ বছর দুই মাসে এমন অপ্রয়োজনীয় কল এসেছে দুই কোটি ৫৭ লাখ ৮৮ হাজার ৯৩৯টি; যা মোট কলের ৫৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। এসব কলের মধ্যে ‘বিরক্তিকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ২৩ লাখ ১১ হাজার ৯৬৫টি কলকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার বিরক্তিকর কল এড়াতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এবার যুক্ত হচ্ছে ‘অটোকলার’। অপ্রয়োজনে ও মজা করার জন্য যেসব কল আসে, সেগুলোকে এই ধরনের কল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অটোকলার যুক্ত হলে গ্রাহক ৯৯৯-এ ফোন করলেই তার লোকেশন ও পরিচিতি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে আসবে কর্তৃপক্ষের কাছে। ৯৯৯ শুধু গ্রাহকের সমস্যা শুনবে এবং দ্রুত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবে। ৯৯৯-এ অটোকলার যুক্ত হওয়ায় বিরক্তিকর কল কমে যাবে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা।
৯৯৯-এর এক কর্মকর্তা বলেন, এখন থেকে কেউ ৯৯৯-এ বিরক্তিকর কল দিলেই তার বিরুদ্ধে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে বিরক্তিকর কলারের ছয় মাসের জেল বা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এমনকি মোবাইল কোর্টের মাধ্যমেও বিচার করা হতে পারে।
এই কর্মকর্তা বলেন, সত্যিকারের বিপদগ্রস্তদের দ্রুত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অটোকলার চালু করা হচ্ছে। এতে অপ্রয়োজনীয়, মিথ্যা তথ্য বা বিরক্তিকর কল কমে যাবে। ৯৯৯ চালুর পর থেকে অপ্রয়োজনীয় কলের সংখ্যা বেশি ছিল। এখন তা অনেক কমে আসছে। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯৯৯-এর কর্মী বাহিনী দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জনগণকে নির্বিঘ্নে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের সব মহানগর এলাকায় মোবাইল ডাটা টার্মিনাল (এমডিটি) ও থানা ডেসপাস সিস্টেম (টিডিএস) চালু করার ফলে সেবাটি আরও সহজ হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চালুর পর থেকে জনগণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে জাতীয় এই সেবাটি। এই সেবার মতো এতো তাড়াতাড়ি আর কোনও সেবা পেরেছে বলে মনে হয় না। ইতোমধ্যে সারাদেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে ৯৯৯ সেবাটি। গত পাঁচ বছর দুই মাস বয়সে ৯৯৯-এ সরাসরি সমাধান যোগ্য কলের মধ্যে পুলিশ সার্ভিস দেওয়া হয়েছে ৮ লাখ ৯৮ হাজার ৩৫টি, ফায়ার সার্ভিস এক লাখ ২৭ হাজার ১৭১টি এবং অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এক লাখ ১২ হাজার ৫৭৬টি।