আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

পঞ্চগড়ে বেক্সিমকোর শত কোটি টাকা আত্মসাৎ, আ'লীগ নেতা আটক

শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, দুপুর ০৪:১৪

Advertisement Advertisement

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ চলমান বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় দেশ ও জনগনের কল্যানে দেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপের পরিচালক এবং বেক্সিমকো পাওয়ার লিমিটেড ও বেক্সিমকো ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিশিষ্ট শিল্পপতি ওসমান কায়সার চৌধুরীর নেতৃত্বে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় দুটি প্রজেক্টের মাধ্যমে ৩০ মেগাবাইট এবং ৫০ মেগাবাইট ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি সৌর বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের উদ্দোগ নেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে স্থানিয় আ'লীগ নেতা হারুনুর রশিদ হারুন প্রধানের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ শুরু করেন। এক পর্যায়ে প্রায় তিন বছর অতিক্রম করলে বেক্সিমকো এর পক্ষে ক্রয় কৃত জমি বুঝে চাইলে নানান টাল বাহানার মাধ্যমে ভুয়ো দলিল দিয়ে কাল খেপন করে জমি বুঝে দিতে অপারগতা হয়। এই দুইটি প্রকল্পের জন্যে প্রায় শত কোটি টাকা আত্নসাৎ করে হারুন প্রধান ও তার সহযোগী দল বল নিয়ে আত্ম গোপনে চলে যায়। 

 

বেক্সিমকো লিমিটেড তাদের কম্পানির সাথে প্রতারনার ও টাকা উদ্ধারে প্রথমিক পর্যায়ে একটি প্রজেক্টের পক্ষে ঢাকায় ধানমন্ডি থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

 

দুটি প্রজেক্টের মধ্যে প্রথম মামলায় একটি প্রজেক্টে বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড এর ৪৬ কোটি ৩৫ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা আত্নসাৎ করার মামলার দ্বিতীয় আসামী হারুন অর রশিদ প্রধান ওরফে হারুন প্রধানকে পঞ্চগড় থেকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।

 

আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী। তিনি জানান, আটকের পর তেঁতুলিয়া মডেল থানায় অবগত করে তাকে ঢাকায় নিয়েছে ডিবি পুলিশ।

 

এর আগে গত ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি মডেল থানায় বাবর মিয়াকে (৬০) প্রধান ও হারুন অর রশিদ প্রধানকে (৫৫) দ্বিতীয় করে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে বেক্সিমকো পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড এর ডেপুটি ম্যানেজার আল মামুন। এর পর মামলার দ্বিতীয় আসামীসহ সকলেই আত্মগোপনে চলে যান। মামলার পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকলে পুলিশ নিয়মিত অভিযান পরিচলানা করে। এর মাঝে মামলার দ্বিতীয় আসামী হারুন প্রধানকে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সন্ধায় ঢাকার ডিবি পুলিশ পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়ন থেকে আটক করে।

 

এজাহার ভুক্ত আসামী হারুন অর রশিদ প্রধান জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের সাতমেড়া বাসামোড় এলাকার মৃত গফুর উদ্দীন প্রধানের ছেলে। একটি মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, হারুন প্রধানসহ অপর অভিযুক্তরা ১১৫ একর ২৪ শতাংশ জমি বিভিন্ন ভূয়া ও জাল জালিয়াত দলিলের মাধ্যমে কোম্পানীর নামে ক্রয়ের কথা বলে ওসমান কায়সার চৌধুরী এবং বিভিন্ন মানুষের নামে ১১৪ টি ভূয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি এবং করতোয়া সোলার লিমিটেড এর নামে ৩১ টি ভূয়া সাব-কবলা দলিলের রেজিস্ট্রি দেখিয়ে, ১৬.০০ একর জমি কোম্পানীকে বুঝিয়ে দেয়। এবং প্রতারণামূলকভাবে তারা তাদের নামে বেনামে এবং তাদের বিভিন্ন কোম্পানী ও ফার্মের নামে বাদীর সংশ্লিষ্ট কোম্পানী থেকে ৪৬ কোটি ৩৫ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করে বলে জানা যায়। অপর আসামীদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

 

এদিকে ২য় প্রকল্পের জন্যে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার আর্থিক বিনিয়োগ বিদেশ থেকে হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইনি জটিলতা এর জন্যে এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ কারীদের নিকট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় সরাসরি ২য় প্রকল্পের নামে কোনো প্রকার মামলা করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদেশী প্রকল্পের পক্ষে বেক্সিমকো আলাদা মামলার কথা ভাবছে। এবং সেই প্রকল্পের স্বার্থে স্থানীয় প্রতারক হারুন প্রধান সহ তার সহযোগী, দলবল ও ভুয়া দলিল তৈরী, রেজসট্রি কাজে জরিত ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারনার অভিযোগে মোট ১৯২ টি মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ব্যক্তি পর্যায়ে প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি মামলা করা হয়েছে। বাকি ১৯১ টি মামলা প্রকীয়াধিন রয়েছে।

 

আরো জানা যায়, স্থানিয়দের পক্ষে ভয়, ভিতি, জবর দখল, ভুমি প্রতারনার অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলার উদ্দেগ নিয়েছে। এর মধ্যে স্থানিয়দের একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

 

এদিকে হারুন প্রধানকে আটক খবরে মিষ্টি বিতরণ করেছে তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের মাগুরমাড়ি চৌরাস্তা এলাকা সহ বিভিন্ন এলাকায় । হারুন প্রধান নিজেকে ওসির ভাই ও আ'লীগ নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকায় বিভিন্ন জনের পয়ত্রিক ভুমি জবর দখল করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এমন কাজে ছোট ভাই ওসি হাসিনুর প্রধান তাকে সব সময় সাহস যোগীয়ে আসতো বলে স্থানিয়দের অভিযোগ।

 

তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তারুল হক মুকু জানান, কোম্পানির জন্য জমি ক্রয় করে দেয়ার নামে দীর্ঘদিন যাবৎ বেক্সিমকো কোম্পানির টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলো হারুন প্রধান। এবং-কি তার হাত থেকে স্থানীয়রাও রোক্ষা পায় নি। তার আচার ব্যবহারের ও প্রতারণার কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠে। তার আটকের খবরে তাই স্থানীয়রা মিলে আমরা আনন্দে মিষ্টি মুখ করেছি। 

 

তিনি আরো জানান, হারুন প্রধান নিজেকে আ'লীগ নেতা ও তার ছোট ভাই কোনো এক থানার ওসি পরিচয়ে, টাকা আত্মসাৎ, প্রতারনা ও স্থানিয়দের ভুমি জবর দখলে রেখেছে।

 

অভিযোগ আছে ঐ পরিবার নিজেদের আ'লীগ ও ওসির পরিবার হিসেবে এলাকায় নানান রকম অপরাধের সাথে জড়িয়ে আছে।

 

হারুন প্রধান আটকের পর স্থানিয়রা তাদের দখল কৃত জমি গুলো ফিরে পেতে নিজ দখলে নিতে শুরু করে।

মন্তব্য করুন


Link copied