ডেস্ক: চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়াকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোববার আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলাটির নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অভিযোগটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় সংঘটিত একটি ‘হত্যাচেষ্টা’র সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, পাশাপাশি অভিযোগ আনা হয়েছে ৩০০-৪০০ ‘অজ্ঞাত’ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও। মামলাটি দায়ের করেন এনামুল হক নামে একজন ব্যক্তি।
মামলার সময়কাল (১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট) জুড়ে নুসরাত ফারিয়া ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। ইমিরেটস এয়ারলাইন্সের টিকিট অনুযায়ী, তিনি ৯ জুলাই ঢাকা থেকে দুবাই হয়ে ১০ জুলাই কানাডার টরেন্টো পৌঁছান। এরপর ১২ আগস্ট টরেন্টো থেকে যাত্রা করে ১৪ আগস্ট ঢাকায় ফিরে আসেন। এ সময় তিনি কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক কনসার্টে অংশ নেন—যার আলোকচিত্র ও ভিডিও আয়োজকদের ফেসবুক পেজ ও ফারিয়ার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যমে এখনো বিদ্যমান।
তার বিদেশে অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে ক্যালগারির এক আয়োজকের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়, যিনি উপস্থিতির সত্যতা নিশ্চিত করেন। এমনকি দেশে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও ১৮-২৩ জুলাই পর্যন্ত সময়কালে তিনি নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন এবং আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছিলেন।
ফেসবুকে ১৯ জুলাই ফারিয়া লেখেন, ‘২ দিন হয়ে গেল, বাংলাদেশে ইন্টারনেট নেই। দেশটি বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন। আমরা কি সত্যিই আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি না? এটা এত কঠিন কেন? খুব অসহায় বোধ করছি।’
২৩ জুলাই তিনি লেখেন, ‘৬ দিন হয়ে গেল আমার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলিনি। আপনারা সবাই জানেন আমার বাবার অবস্থা তেমন ভালো না। কিন্তু আমি আমার সহকর্মী ছাত্র ভাই এবং বোনের জন্য অনুভব করি। সবার সুস্থতা ও দেশের শান্তি কামনা করছি।’
নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংস্কৃতি অঙ্গনে নেমে এসেছে বিস্ময় ও হতাশা। অনেকেই এই গ্রেপ্তারকে ‘নাটক’ ও ‘ভূয়া অভিযোগ’ বলে অভিহিত করছেন।
সোমবার আদালতের মাধ্যমে ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে এবং তার জামিন শুনানির জন্য আগামী ২২ মে দিন ধার্য করেছে আদালত।