প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রাজারহাটে আবারও তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে চরাঞ্চলের ফসলে ক্ষেত। আকস্মিকভাবে তিস্তা ব্যারেজ খুলে দিলে রাজারহাট এলাকায় চরগুলোতে পানি বেড়ে যাওয়ায় চিনা বাদাম, মরিচ, পাট ডুবে যায়। মারাত্মক ক্ষতির সন্মূখীন হয় কৃষকরা। এর আগেও চরাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় বাদাম, মরিচ, পাটসহ রবিশষ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বার বার ফসল ডুবে যাওয়ায় বেশ লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার(১ জুন) দুপুরে আকস্মিকভাবে উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যায়। এতে চরের নিম্নাঞ্চল ডুবে গিয়ে বাদাম মরিচসহ বেশ কয়েকটি ফসল পানি নীচে চলে যায়। এমনকি স্রোতে ভেসে যায় ক্ষেতের বাদাম মরিচসহ রবিশস্য। ডোমার পয়েন্টে তিস্তা ব্যারেজ খুলে দেয়ায় হু হু করে পানি বাড়তে থাকে এ অঞ্চলে। ফলে রোববার(১জুন) দুপুরের দিকে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ, তৈয়বখাঁ, চর রামহরি ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের চর খিতাব খাঁ, গতিয়াসামের নিম্নাঞ্চল ডুবে যায়।
উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চর বিদ্যানন্দ গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলামের ২ একর জমির চিনা বাদাম, মোখলেজ উদ্দিনের ৩ একর জমির চিনা বাদাম, আবুল মিয়ার ৪ একর জমির চিনা বাদাম, সরিফুল ইসলামের ২একর জমির চিনা বাদাম, জিহাদ মিয়ার ২.৫ একর জমির চিনাবাদাম, আব্দুল কাদেরের ৪.৫একর জমির চিনাবাদাম পানির নীচে তলিয়ে যায় এবং কিছু অংশ স্রোতে ভেসে যায়।
কৃষক সরিফুল ইসলাম বলেন, ধার-দেনা করে ২ একর জমিতে চিনা বাদাম চাষ করেছি। পর পর দু’বার পানিতে ডুবে যাওয়ায় কিছু অংশও ঘরে তুলতে পারবো না। কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, আমি ২একর চিনা বাদাম করেছি। এবারের পানির স্রোতে প্রায় সব ভেসে গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে তিস্তা নদীতে জেগে উঠা চরে চিনাবাদম ১৭৫ হেক্টর, পাট ২০ হেক্টর, মরিচ ৩ হেক্টর, শাক-সবজি ৫ হেক্টরসহ চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু পর পর দু’বার মাঝারি- ভারি বৃষ্টিতে এবং পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিশেষ করে চিনা বাদাম ও মরিচ পানির নীচে রয়েছে।
রোববার(১জুন) বিকালে রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুরন্নাহার সাথী বলেন, হঠাৎ করে আবারও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের নামার চর কিছুটা ডুবে গেছে। আমাদের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে রয়েছে। চিনা বাদাম পানি থেকে তুলে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষকদের।