স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলকারখানা থেকে লোহা পাচারের অভিযোগে আটক করা হয়েছে সুলতান মৃধা নামের এক কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রেল কারখানা থেকে তাকে আটক করে রেলপুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর(আরএনবি) সদস্যরা।
উক্ত সুলতান মৃধা সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার পিডাব্লিউ (উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী-পথ) শাখার স্টোর (গুদাম) ইনচার্জ।
অভিযোগ মতে, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার(১৯ জুন ভোরে ফজরের সময় দুই পিক-আপ গাড়িতে করে রেললাইন পাঁচার করছিল অফিস ইনচার্জ সুলতান মৃধা। স্থানীয়রা বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্রুত রেলওয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানান। এসময় রেললাইন সহ পিক-আপ দুইটি আটক করা হয়।
অভিযোগ মতে, ঘটনা ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়। কারন রেলওয়ের প্রধান কার্যালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আত্মীয় হওয়ায় বারবার অপরাধ করার সত্ত্বেও নিজেকে রক্ষা করতেন সুলতান মৃধা। পাশাপাশি রেলওয়ের মালামাল চুরি এবং বিভিন্ন অনৈতিক ঘটনায় তার নাম জড়িয়ে রয়েছে। এর আগেও জনতার হাতে কয়েকদফা আটক হলেও পার পেয়ে যান তিনি।
এলাকাবাসী জানায়, এবারের ঘটনায়ও সুলতা মৃধা রক্ষা পেতে যাচ্ছিল। কিন্তু ঘটনাটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় সৃস্টি হওয়ায় সে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। ফলে রেলকারখানা ঘিরে একটি পক্ষ তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিক্ষোভ করে।
পরে দুপুরের দিকে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর(আরএনবি) সদস্যরা সৈয়দপুর কারখানার অভ্যাতরে থাকা উক্ত কর্মকর্তার কার্যালয় হতে আটক করে রেলওয়ে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গ্যাস দিয়ে রেললাইন কেটে দুইটি পিকআপে পাচার করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে জানা যায়। রেলওয়ে পুলিশ জানায়, পাচারকৃত মালামালের গন্তব্য ও ঘটনার সাথে জড়িতদের তথ্য রেলওয়ে পুলিশ পেয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করেনি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহামুদ-উন-নবী বলেন, আসামীকে আটক করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, পিডাব্লিউ অফিসের স্টোর থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ও লোহা কাটার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। পাচারকৃত রেললাইন গ্যাস দিয়ে কেটে বিক্রি করা হয়েছে। সুলতান মৃধার বিরুদ্ধে আইনানুগ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, পিডাব্লিউ এর ওই ইনচার্জের বিরুদ্ধে এধরনের অনেক অভিযোগ পেয়েছি। এমন জনবল রেলওয়ের জন্য ক্ষতিকর।