নিউজ ডেস্ক: রংপুরের কাউনিয়া থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত রেলপথ মিটারগেজ থেকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০১৮ সালে। রেলপ্রেমী এ অঞ্চলের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু সিদ্ধান্তের সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এই প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। একনেকের বৈঠকে প্রকল্প পাস হলেও কাজ শুরু করতে পারেনি রেল বিভাগ। ভারতীয় অর্থে এটি করার কথা ছিল। অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় যে কোনো সময় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান স্থানীয় প্রশাসন। স্থানীয় মানুষজনের ভাষ্য, কাজ শুরুর আগে যদি প্রকল্পের সমাপ্তি টানা হয় এটি হবে রংপুরবাসীর জন্য নতুন আরেক বৈষম্য।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পে কাউনিয়া থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার মেইন লাইন স্থাপন করার কথা রয়েছে। সাতটি স্টেশন বিল্ডিং, গার্ডার ব্রিজ ১৪টি ও বক্স কালভার্ট ৩৩, চারটি প্ল্যাটফর্ম শেড নির্মাণের কথা ছিল। এ ছাড়া ছয়টি কম্পিউটারবেজড সিগন্যালিং সিস্টেম করার কথা রয়েছে। সে সময় রেলপথটিতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ২৪ লাখ এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩১৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ের কথা ছিল। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর। শেষ তো দূরের কথা এখন পর্যন্ত কাজই শুরু করতে পারেনি রেল কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ার পরে ওই বছরের ১০ মার্চ পরামর্শক নিয়োগের জন্য নোটিস প্রকাশ করা হয়। ২৬ জুলাই সেটা উন্মুক্ত করা হয়। মূল্যায়নের পর এটি ওই বছরের ১৯ আগস্ট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের বিভিন্ন পর্যায়ে ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের সম্মতি গ্রহণে দীর্ঘ সময় লাগছে। এ কারণে ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরুর আগেই থমকে গেছে। জানা গেছে, চিলাহাটি থেকে পার্বতীপুর-ঈশ্বরদী পর্যন্ত রেলপথ ব্রডগেজ। পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া পর্যন্ত রেলপথ মিটারগেজ। কাউনিয়া-পার্বতীপুর ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তরিত হলে একই সঙ্গে মিটারগেজ ও ডুয়েলগেজ ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এতে যোগাযোগব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে সে সঙ্গে অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে ভারতসহ নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সহজেই রেলওয়ে ট্রানজিট স্থাপন করতে পারবে প্রকল্পটি যদি বাস্তবায়ন হয়।
কাউনিয়া-পার্বতীপুর ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক আহসান জাবির জানান, প্রকল্পটি ভারতীয় অর্থায়নে করার কথা ছিল। বর্তমানে ভারত এই প্রকল্পে কোনো অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে না। ফলে প্রকল্পটির সমাপ্তি ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে।