নিউজ ডেস্ক: জুলাই অভ্যুত্থানে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামের অটোরিকশা চালক মো. সুলতান মিয়া (৪০) হত্যার ১১ মাস পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হত্যা মামলায় কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি ও তিতাস) আসনের আ.লীগের দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, সাবেক দাউদকান্দি উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) মোহাম্মদ আলী সুমন ও সাবেক দাউদকান্দি পৌর মেয়র নাঈম ইউসুফ সেইনসহ ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে গত বছরের ৫ আগস্ট দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর বাজারে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের শোলাকান্দি গ্রামের সুলতান মিয়া মারা যান। তার স্ত্রী রেহানা বেগম ৩০ জুন দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি জুনায়েত চৌধুরী রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৫ আগস্ট তিতাস উপজেলার শোলাকান্দি গ্রামের অটোরিকশা চালক সুলতান মিয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পক্ষে দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারে মিছিলে সামনের সারিতে অংশগ্রহণ করেন। ওই সময় এজাহার নামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ১০০/১৫০ জন আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গৌরীপুর বাজারের সামনে অবস্থান নেয় এবং দেশীয় তৈরি অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে আসামিদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে মো. সুলতান মিয়া গুলিবিদ্ধ হন। তাকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হলে পথেই মারা যান। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ রেখে দেয়। ৭ আগস্ট দুপুরে শাহবাগ থানা পুলিশ সুলতানের লাশের সুরতহাল এবং ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
মামলা দেরিতে করার কারণ বিষয়ে সুলতানের স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে কষ্টে জীবন পার করছি। মামলা করতে খরচ হবে, এই ভেবে এত দিন মামলা করেননি, পরে বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন।
দাউদকান্দি মডেল থানার ওসি জুনায়েত চৌধুরী বলেন, গত বছরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে সুলতান নামে একজন নিহত হওয়ার ঘটনায় ৩০ জুন মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।