নিউজ ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আপনারা প্রস্তুত হন, আগামী ২৩ আগস্ট শহিদ মিনারে দেখা হবে। আমরা জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ।
রবিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার ষষ্ঠ দিনে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা এনসিপি এ পথসভার আয়োজন করে। এর আগে নগরীর গোরহাঙ্গা রেলগেট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নিউমার্কেট ঘুরে সাহেববাজারের সমাবেশে যুক্ত হয়।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার বিচার আমরা দেখতে চাই। সংস্কার দেখতে চাই এবং নতুন সংবিধান দেখতে চাই। এই প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান এই দেশের মানুষকে উপহার দেবে। এই সংবিধান বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে। যেই সংবিধান ইনসাফ নিশ্চিত করবে। স্বৈরতন্ত্র এবং পরিবারতন্ত্র অবসান ঘটাতে হবে এই বাংলাদেশ থেকে। মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা নতুন রাজনীতি এবং বন্দবস্ত গড়ে তুলব।
রাজশাহী সমাবেশ জুলাই পদযাত্রা ইতিহাসে স্মরণ হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যত্থানের এক বছর হতে যাচ্ছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা রাজপথে নেমেছিলাম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমার ভাই আবু সাইদ পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। অনেক স্বপ্ন নিয়ে রাজশাহীর ভাইয়েরা শহিদ হয়েছিলেন। আমাদের স্বপ্ন ছিল না-কেবল শেখ হাসিনার পতন। আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি নতুন বাংলাদেশ। সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। কিন্তু দুঃখের কথা ৫ আগস্টের পরে নানা শক্তির ষড়যন্ত্রে সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা স্বীকার করে নিচ্ছি আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদেরও সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু আজকে আমরা আপনাদের সামনে শপথবদ্ধ। এই ভুল আমরা আর করব না। আমরা আর সুযোগ দেব না। যারা এই গণঅভ্যুত্থানকে, এই সংস্কারের যাত্রাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের কোনোদিন ক্ষমা করবে না। ৫ আগস্ট ২০২৪-ই আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন। এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবন। আমরা গণভবনকে জয় করেছি। এবার আমরা জাতীয় সংসদ ভবনকে জয় করব। ইনশাল্লাহ জাতীয় সংসদে তারুণ্যে অভূতপূর্ব বিজয় উদযাপিত হবে সামনের নির্বাচনে।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, রাজশাহী ঐতিহ্যের নগরী। রাজশাহী জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির নগরী। এই পদ্মারপাড়ে রাজশাহী যুগযুগ ধরে টিকে ছিল। আমরা স্মরণ করছি-মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীকে। তিনি এই রাজশাহী শহর থেকে ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেছিল। আমরা ঘোষণা করছি যদি আমাদের নদীর হিস্যা, আমাদের পানির হিস্যা বুঝে নিতে হয়। আমাদের সীমান্তকে রক্ষা করতে হয়-তাহলে আমরা আবারও লংমার্চ শুরু করব, রাজশাহী শহর থেকে।
আমরা জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্ধুরা আপনারা প্রস্তুত হন-আগামী ২৩ আগস্ট শহিদ মিনারে দেখা হবে। আমরা জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। যারা বলে জুলাই কেবল আবেগের বিষয়, যারা বলে জুলাইকে কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার প্রয়োজন নাই, তাদের দেখিয়ে দিতে হবে ২৩ আগস্ট ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুজিববাদী সংবিধানের বিরুদ্ধে একত্র হবে। যারা জুলাইকে সংবিধানে জায়গা দিতে চায় না, যারা জুলাইকে কোনো আইনি কাঠামোতে জায়গা দিতে চায় না, তারা মুজিববাদে ফেরার রাস্তা তৈরি করতে চায়। তারা মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করেছে। মুজিববাদের যারা পাহারাদার তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।