নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন আড়াই ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হয়েছেন। বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ১৫ মিনিটে তিনি মুক্ত হন।
এর আগে রাত ১২টা ৫০ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী হল সংসদে ভিপি (সহসভাপতি) পদে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে কামাল উদ্দিনকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এ পদের ভোট আবার গণনা দাবি করেছিলেন।
ছাত্রদলের নেতারা জানান, সহ-উপাচার্য তাদের এ পদের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন। এ কারণে তাকে ছাড়া হয়েছে৷
ছাত্রদলের অভিযোগ, সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে তাদের প্রার্থী জমাদিউল আওয়ালকে কারচুপির মাধ্যমে পরাজিত দেখানো হয়েছে। তারা দাবি করেন, ঘোষিত ফলাফলে জমাদিউল পেয়েছেন ১ হাজার ২০৩ ভোট, আর ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্রার্থী নেয়ামত উল্লাহ পেয়েছেন ১ হাজার ২০৬ ভোট।
ছাত্রদলের এক কর্মী বলেন, ‘প্রকৌশল অনুষদের ৩১২ নম্বর কক্ষে দর্শন ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়েছেন। অথচ ওই কক্ষে জমাদিউল মাত্র তিন ভোট পেয়েছেন। এটা কারচুপির ফল।’
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি ফলাফল ঘোষণা শেষে বেরিয়ে আসছিলাম। এ সময় একদল শিক্ষার্থী এসে ৩১২ নম্বর কক্ষের ভোট পুনঃগণনার দাবি জানায়। আমি তাদের নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বললেও তারা মানেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের প্রচেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষবার নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ২৭ হাজার ৫১৬ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ কবেন। চাকসুতে এবার ভোটার প্রায় ২৭ হাজার ৫১৬ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ১৫৬ জন। নির্বাচনে লড়তে প্রার্থী হয়েছেন ৯০৮ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৬ পদে লড়ছেন ৪১৫ প্রার্থী। একই সঙ্গে ১৪টি হল ও ১টি হোস্টেলে প্রার্থী হয়েছেন ৪৯৩ জন।
কেন্দ্রীয় সংসদে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ২৪ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২২ জন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে ২২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
একেকটি হলে পদসংখ্যা ১৪। সে হিসাবে ১৪টি হল ও ১টি হোস্টেলে মোট পদ ২১০টি। ছাত্রীদের ৫টি আবাসিক হলে ৭০টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১২৩ জন। একজন করে প্রার্থী রয়েছে ১৬টি পদে। সে হিসাবে ৫৩টি পদে ভোট হবে।
চাকসু নির্বাচনে লড়তে প্যানেল হয়েছে ১৩টি। এর মধ্যে ছাত্রদলের প্যানেল; ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’, বামপন্থী ছাত্রসংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ১০টি সংগঠন মিলে ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ (৩ পদে কেউ নেই), ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’ (৯টি পদে কেউ নেই) এবং জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্ট’স অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি ও ছাত্র ফেডারেশনের জোটবদ্ধ প্যানেল ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্যের’ মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।