আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫ ● ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিরল গাছের সংগ্রহশালা: এ যেন এক ‘ট্রি মিউজিয়াম’

বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, দুপুর ০৪:৫৩

Advertisement

২০১৩ সালে নির্মিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর (বেরোবি) একসময় ছিল গাছপালাবিহীন ধু ধু প্রান্তর। ক্যাম্পাসে এসে হতাশ হতেন শিক্ষার্থীরা। প্রখর রোদে ছায়ার দেখা পাওয়া যেত না । 
 
এখন সেই ক্যাম্পাস যেন ক্রমেই রূপ নিচ্ছে এক বৃক্ষ সংগ্রহশালায়। দেশের অন্যতম সবুজ প্রাঙ্গণ হিসেবে পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে রোপণ করা হয়েছে প্রায় ৩৬,০০০ গাছ, যার মধ্যে রয়েছে প্রায় ৩০০ প্রজাতির গাছপালা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো—এই প্রজাতির অনেকগুলোই বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশে এখন বিরল।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড.আবু সালা মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান ওরফে তুহিন ওয়াদুদ; শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সহায়তায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা সংগ্রহ করে ক্যাম্পাসে লাগানো শুরু করেন।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব ও পরিবেশগত উদ্যোগের অংশ হিসেবে এসব বিরল প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে আগার, তামাল, কোইনার, কুসুম, জাকারান্দা, তেলসুর, উডাল, চালমুগড়া, কাওফল, চাম্পা, পদৌকসহ নানা গাছ, যেগুলোর কিছু কিছু সাধারণত শুধুই পাহাড়ি অঞ্চলে বা সংরক্ষিত বনে দেখা যায় যেগুলোর নাম সচরাচর আমাদের কানেই আসে না।
 
বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ জানায়, “শুধু ছায়া আর সৌন্দর্য নয়, শিক্ষার্থীদের গবেষণা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই গাছগুলো একটি জীবন্ত গবেষণাগারের ভূমিকা পালন করবে। আমরা একে ‘ট্রি মিউজিয়াম’ হিসেবেই রূপান্তরের পরিকল্পনা নিয়েছি।”
 
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র থেকে আরও জানা যায়, প্রতিটি গাছের নাম, বৈজ্ঞানিক পরিচিতি, উপকারিতা ও সংরক্ষণ প্রয়োজনীয়তার তথ্য সম্বলিত ডিজিটাল ট্যাগ সংযুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা সহজেই গাছ চিনতে পারবে। 
 
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের শিক্ষার্থীরা বলেন, “প্রতিদিন ক্লাসের ফাঁকে এসব গাছের ছায়ায় বসে কাটানো সময় আমাদের মানসিক প্রশান্তি দেয়। এসব গাছের নাম জানাও আমাদের জন্য শিক্ষণীয়।”
 
পরিবেশবিদদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অনুসরণ করা উচিত। এতে করে পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়বে।
 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে গাছের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে দেশের হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিগুলো সংরক্ষণের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
 
লেখক: সানজানা ইসলাম নশিন, শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

মন্তব্য করুন


Link copied