আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫ ● ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৩১ জুলাই ২০২৫

সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলতে পারে: তারেক রহমান

বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, রাত ১০:৫৭

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:সরকারের যে কোনো ভুল সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রাকে সংকটে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ নিতে ওত পেতে রয়েছে। ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার ও নাগরিকদের সতর্ক থাকতে হবে।

বুধবার সাভারের শ্রীপুরের আশুলিয়া থানাসংলগ্ন জুলাই আন্দোলনের সময় লাশ পোড়ানোর স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।

তারেক রহমান বলেন, সরকার ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে জনগণের মুখাপেক্ষী করা গেলে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আসবে। জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সর্বস্তরের জনগণ নিশ্চয় কয়েকজনের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য দেড় দশক ধরে আন্দোলন অব্যাহত রাখেননি কিংবা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হননি।

তিনি বলেন, মানুষ রাষ্ট্র ও সরকারে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদকে হটিয়েছে; জীবন উৎসর্গ করেছে। সুতরাং সরকারে যখন যারাই থাকুক, তাদের অবশ্যই নাগরিকদের কথা শুনতে হবে। নাগরিকের আশা ও ভাষা বুঝতে হবে। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে চাইলে তাকে অবশ্যই জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে। বিএনপি জনগণের ক্ষমতায়নের রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদ হটিয়ে জনগণ অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার ভার অর্পণ করেছে। এখন জনগণের মালিকানা তাদের হাতে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অংশ নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। শিক্ষাঙ্গন, স্থানীয় সরকার কিংবা জাতীয় সরকার– প্রতিটি ক্ষেত্রে বিএনপি জনগণের ভোটে প্রতিনিধি নির্বাচিত করার পক্ষে। কিন্তু এসব নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সরকার অগ্রাধিকার নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে পারছে কিনা, জনগণের সামনে এটি বিরাট প্রশ্ন।

জুলাই শহীদদের পরিবারের উদ্দেশে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের শহীদরা শুধু সংখ্যা নন। প্রাণের সমাপ্তির অর্থ একটি পরিবারের মৃত্যু, একটি স্বপ্ন ও সম্ভাবনার অবসান। আপনাদের সন্তান ও স্বজনের মৃত্যু দেশ এবং জনগণকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে। শহীদের কাছে ঋণী গোটা দেশ। প্রত্যেক শহীদ পরিবারের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব রয়েছে। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সাভার-আশুলিয়া কিংবা অন্য কোনো সুবিধাজনক এলাকায় শ্রমজীবী-কর্মজীবী মানুষের আত্মত্যাগের সম্মানে একটি বিশেষ স্থাপনা করবে।

সমাবেশে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজ অনেক রকম কথা হচ্ছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদ হচ্ছে। গণতন্ত্রে এটি স্বাভাবিক। কিন্তু এমন কোনো কিছু করবেন না, যাতে আবার গণতন্ত্র ব্যাহত হয়। এমন অবস্থা তৈরি করবেন না, যাতে আবার ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশে ফিরে আসার সুযোগ পান।

আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একমাত্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার গ্যাস চেম্বারে মানুষ হত্যা করেছিল। আমাদের দেশে শেখ হাসিনা ছাত্রদের পুড়িয়ে মেরেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু এনজিওবাদ আজ দেশ চালাচ্ছে। এদের থেকে কীভাবে মুক্তি নেবেন, সে পথের নির্দেশনা দেবেন তারেক রহমান।’

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, সহপরিবার কল্যাণবিষয়ক দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ।

মন্তব্য করুন


Link copied