নিউজ ডেস্ক: শক্তিশালী ভূমিকম্পের প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতে সাড়ে ৩১ ঘণ্টার মধ্যে আরো তিনবার ভূকম্পন হয়েছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চারবার ভূমিকম্প হলো। এতে জনমনে আতঙ্ক আরো বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় বা মাঝারি ধরনের শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর এর চেয়ে কম মাত্রায় একাধিক আফটারশক বা পরাঘাত হতে পারে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, এই পরাঘাত শুক্রবারের ভূমিকম্প-পরবর্তী প্রতিক্রিয়া, না বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বলক্ষণ?
শুক্রবার নরসিংদীর মাধবদীতে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকাসহ আশপাশের কয়েক জেলার মানুষকে প্রচণ্ড নাড়া দেয়। এর ২৪ ঘণ্টার মাথায় আবার ভূমিকম্প হয়েছে। গতকাল সকালে হওয়া ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল এবারও নরসিংদী। সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিটের পর এক সেকেন্ডের ব্যবধানের আরো দুইবার ভূকম্পন হয়।
সব মিলিয়ে সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় চারটি ভূমিকম্প হয়েছে।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শনিবারের ভূমিকম্পগুলো শুক্রবারের বড় ভূমিকম্পের পরাঘাত (আফটারশক) হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। ভূমিকম্প থেকে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে প্রস্তুতি ও পদক্ষেপের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
রাজধানীর মিরপুর-৬ নম্বরের বাসিন্দা সারিয়া রহমান হিয়া একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। গতকাল সন্ধ্যার ভূমিকম্পের সময় তিনি বাসাতেই ছিলেন। ভূমিকম্পের সময়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম, গতকালের (শুক্রবার) ভূমিকম্পের কারণে মেন্টালি ট্রমাটাইজড (মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত)। আগের দিনের তুলনায় ঝাঁকুনি খুবই কম। বিছানায় শুয়ে ছিলাম, উঠে বসতে বসতেই থেমে গেছে। কিছুক্ষণ পর যখন বুঝতে পারলাম, এটা ভূমিকম্প ছিল, তখন খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
যেহেতু শুক্রবার থেকে তখন পর্যন্ত এতটুকু সময়ের মধ্যেই তিনবার ভূমিকম্প হয়ে গেছে, মনে হচ্ছিল, কিছুক্ষণ পর বুঝি আবার আরেকটা ভূমিকম্প হবে। গতকালের শকটাই (ধাক্কা) আমি আবার অনুভব করছিলাম।’
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাঈয়াৎ কবীর গতকাল বলেন, ‘গতকালই (শুক্রবার) আমরা বলেছিলাম, একটা বড় ভূমিকম্প হওয়ার পর সাধারণত আফটারশক হয়। আমি বলব, শনিবারের ভূমিকম্প শুক্রবারের ভূমিকম্পেরই আফটারশক। এ ধরনের আফটারশক সাধারণত আগের ভূমিকম্পের চেয়ে কম শক্তির হয়ে থাকে। এই আফটারশক একাধিক হতে পারে। একটা, দুইটা—এমনকি ৫০টাও হতে পারে।’