স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে একটি রেলওয়ে কোয়ার্টার থেকে আলেমা বেগম (৪০) নামের এক নারীকে হত্যা ঘটনার মুল আসামী জাহিদুল ইসলামকে(৫০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার(১৩ আগষ্ট) রাত ৮টার দিকে উত্তরবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিইম উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও মোবাইল ফোন ট্যাকিং এর মাধ্যমে আসামী জাহিদুলের অবস্থান সনাক্ত করে তাকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সৈয়দপুর থানা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামী জাহিদুল ইসলাম পেশায় ঝালমুড়ি ও ফুচকা বিক্রেতা। তিনি স্ত্রী সহ সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়ার একটি রেল কোয়ার্টারে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। জাহিদুল সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব চাপড়া গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে। তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কর্মের তাগিদে তারা থাকেন ঢাকা ও চট্টগ্রামে।
গত বৃহস্পতিবার(৭ আগষ্ট) জাহিদুলের স্ত্রী রোকসানা বেগম চট্টগ্রামে বেড়াতে যান ছেলে দুলালের বাসায়। স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে জাহিদুল গত শনিবার(৯ আগষ্ট) রাতে ওই নারীকে তাঁর ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসেন। যা আশেপাশের প্রতিবেশিরা দেখেন। পরদিন রবিবার(১০ আগষ্ট) ভোরের দিকে ওই কোয়ার্টারে জাহিদুল তাঁর রুমে তালা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ফলে গত দুইদিন ধরে ওই রুমে তালা ঝুলতে দেখায় লোকজন ধারণা করছিল জাহিদুল চট্টগ্রামে তার ছেলে দুলালের কাছে গিয়েছে।
মঙ্গলবার(১২ আগষ্ট) সকাল ১০টার দিকে প্রতিবেশী সেলিনা বেগমকে জাহিদুল ইসলাম ফোন করে জানান তার ঘরে একটি মরদেহ রয়েছে। পুলিশকে যেনো খবর দেয় তারা এসে মরদেহ নিয়ে যায়। এরপর সেলিনা দ্রুত পার্শ্ববর্তী লোকজনকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়। পরে সৈয়দপুর থানা পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)’র রংপুরের ক্রাইম সিনের টিম ধটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে। সুলতহাল শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়। এঘটনায় জাহিদুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে সৈয়দপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
পুলিশ আরো জানায়, নিহত আলেমা বেগম ফরিদপুর জেলা সদরের নিশান গোপালপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৈয়দপুরের একটি রেস্তেরায় কাজ করতেন। তিনি সৈয়দপুর শহরের জোড়াপুকুর মুন্সিপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকতো।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দপুর থানার উপ-পরিদর্শক মনিরুজ্জামান জানান, ধারণা করা হচ্ছে শনিবার(৯ আগষ্ট) রাতেই শ্বাসরোধ করে আলেমা বেগমকে হত্যা করা হয়েছিল। জাহিদুলের সাথে তার কি সর্ম্পক? কেনো সে তার ঘরে গিয়েছে? কিভাবে এবং আরও কে কে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত? এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যা পূর্নাঙ্গ তদন্তের স্বার্থে এখনি প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আসামী জাহিদুল, তার স্ত্রী ও ছেলেকে সৈয়দপুর থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।