আর্কাইভ  রবিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৫ ● ২০ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ৫ অক্টোবর ২০২৫
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হঠাৎ ঝড়ে ৮০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হঠাৎ ঝড়ে ৮০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত

তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

তফসিল ঘোষণার আগেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার  কাজ শুরুর দাবিতে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান

রংপুরসহ পাঁচ জেলায় পদযাত্রা
তফসিল ঘোষণার আগেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবিতে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান

দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

গুলতেকিনের পর এবার হুমায়ূনকে নিয়ে শাওনের পোস্ট

রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫, দুপুর ০২:৪৩

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন খান নিজের জীবনের কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। 

 

গুলতেকিন খান তার সাম্প্রতিক স্ট্যাটাসে সরাসরি হুমায়ূন আহমেদের নাম উল্লেখ করে তাদের দাম্পত্য জীবনের টানাপোড়েনের কথা তুলে ধরেন। যা ঘিরে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

এবার হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে পোস্ট দিলেন তার আরেক স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের আত্মজীবনীমূলক বই ‘নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ’-এর একটি মর্মস্পর্শী অংশ নিজের ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন শাওন। নিউইয়র্কে থাকা অবস্থায় ক্যানসারের চিকিৎসার যন্ত্রণা ভোলার জন্য এই বইটা লেখেন।

যেখানে উঠে এসেছে মানসিক অসুস্থতা ও বিকৃত মানসিকতার মানুষের নির্মমতার দিক। 

রোববার (৫ অক্টোবর) নিজের ফেসবুকে শাওন তুলে ধরেছেন কীভাবে স্বামীর (হুমায়ূন আহমেদ) অসুস্থতার সময় ফেসবুকে বিদ্রুপ মন্তব্য করেছিল। শাওনের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

“একদিন লক্ষ করলাম, সে (শাওন) ঝিম ধরে কম্পিউটারের ফেসবুকের পাতার দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখের পাতায় অশ্রুবিন্দু।

আমি বললাম, সমস্যা কী? কেয়ারগিভার বলল, কোনো সমস্যা না। সামান্য মন খারাপ। কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। আমি বললাম, আমাকে বলো, দেখি, মন খারাপ কাটানোর চেষ্টা করতে পারি কি না। তোমাকে বলব না।

তোমার মন খারাপ হবে। আমি বললাম, ‘সহজে মন খারাপ হবে, এমন মানুষ আমি না’। বুঝতে পারছি, ফেসবুকে পাঠানো কারও কমেন্ট পড়ে তুমি হতাশ হয়েছ। কী লিখেছে? শাওন পড়ে শোনাল। কেউ একজন লিখেছে, তোমার উচিত শিক্ষা হয়েছে। আমি খুশি যে তোমার স্বামীকে ক্যানসার দিয়ে আল্লাহ তোমাকে শিক্ষা দিলেন। এই শিক্ষা তোমার আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল। শাওনের মেয়ে লীলাবতী যখন মারা গেল, তখনও সে এ ধরনের চিঠিপত্র পেত। লেখা থাকত, ‘তোমার কঠিন শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি। আরও শাস্তি হবে’। এই ধরনের কথা। 

তির্যক মন্তব্য দেখে শাওন ভেঙে পড়লেও, লেখক তার স্ত্রীকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, “আমি শাওনকে বললাম, ‘পৃথিবীতে মানসিক অসুস্থ অনেক মানুষ। তাদের নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আমরা ভাবব সুস্থ মানুষদের কথা। তোমার ফেসবুকে শত শত মানুষ কত চমৎকার সব কথা লিখছে। লিখছে না? -হ্যাঁ। 

এর মধ্যে একজনের কথা চিন্তা করো। সে চলে গেছে মক্কায়, কাবা শরিফে। সেখান থেকে তোমাকে জানিয়েছে, ‘আমি স্যারের জন্য দোয়া করতে এসেছি। শাওন আপু, আপনি একটুও চিন্তা করবেন না। এর পরও কি মন খারাপ করা তোমার উচিত’? শাওন বলল, না, উচিত না। তাহলে মিষ্টি করে একটু হাসো। হাসতে পারব না। বলেও সে হাসল।

সবশেষে হুমায়ূন আহমেদ তার নিজের জীবনেও এক বিকৃত মানসিকতার যুবকের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। তিনি ‘নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ’ বইয়ে লিখেছেন, ‘আমাদের আশপাশে বিকৃত মানসিকতার মানুষের সংখ্যা কি বাড়ছে? মনে হয় বাড়ছে। 

একজনের কথা বলি, সে আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য হাস্যকর কাণ্ডকারখানা শুরু করল। একটা পর্যায়ে গেটের সামনে স্ট্রাইক করার মতো অবস্থা। মহা বিরক্ত হয়ে তাকে আসতে বললাম। ২৩-২৪ বছরের যুবক। কঠিন চোখমুখ। আমি বললাম, এখন বলো, ‘আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য এত ব্যস্ত হয়েছ কেন? বিশেষ কিছু কি বলতে চাও?’  -চাই। তাহলে বলে ফেলো। সেই যুবক তাকে সরাসরি বলেছিলেন, ‘আপনার লেখা আমার জঘন্য লাগে’।

যুবকের কথা শুনে হুমায়ূন আহমেদ বলেন, “এই কথাটা বলার জন্য এত ঝামেলা করেছ?’ -হ্যাঁ! কারণ সরাসরি এই কথা আপনাকে বলার কারোর সাহস নাই। সবাই আপনার চামচা। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, আরও কিছু কি বলবে? ছেলেটা তখন জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ’। বলে ফেলো। সে ইংরেজিতে বলল, ‘আই ওয়ান্ট ইউ টু ডাই সুন’ (আমি চাই আপনি শিগগিরই মারা যান)। 

উত্তরে হুমায়ূন আহমেদ বলেছিলেন, ‘আই হোপ অ্যান্ড প্রে ইউ হ্যাভ আ লং অ্যান্ড মিনিংফুল লাইফ’ (আমি আশা করি এবং প্রার্থনা করি আপনার জীবন দীর্ঘ হোক)।’

মন্তব্য করুন


Link copied