স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুণঃবহাল সহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের খেলনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সনিক (বাংলাদেশ) লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার(১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উত্তরা ইপিজেডের প্রধান ফটক থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচী করেন শ্রমিকরা। দুইঘন্টা ব্যাপী সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর শ্রমিকরা স্মারকলিপি প্রদান করে ফিরে যায়।
অপরদিকে শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে একইদিন বিকালে সনিক (বাংলাদেশ) লি. পরিচালক মি. সু ইয়াংবাও (পোলো) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
জানা যায়, ৯ দফা দাবিতে শ্রমিকরা গত তিনদিন ধরে কারখানায় না গিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলনে তৃতীয়দিন শ্রমিকরা নীলফামারী ডিসি অফিস চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালিন অভিযোগ করে বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই কারখানার দুই শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিবারিক কোনো সমস্যায় ছুটি নিতে চাইলে ছুটি দেওয়া হয় না। দুপুরের খাবারের সময় বৃদ্ধি, নির্ধারিত সময়ে ছুটি প্রদান, কারখানা দূর্নীতি বন্ধ, বিভিন্ন দাবিসহ দ্রুত ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের চাকরিতে ফেরত নেওয়ার দাবিও জানানো হয়। শ্রমিকরা আরও জানান, মালিকপক্ষ তাদের ২৬ দফা যৌক্তিক দাবি মেনে নিলেও কারখানার কয়েকজন বাঙালি ঊর্ধতন কর্মকর্তা এসব দাবি বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছেন। এমনকি তারা কারখানায় দূর্নীতিও করেছেন। তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালে কোনো কারণ ছাড়াই শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এমনকি অসুস্থতার জন্য ছুটি চাইতে তা দেওয়া হয় না এবং ওভারটাইম করেও তাদের প্রাপ্য টাকা প্রদান করে না তারা।
এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়, শ্রমিক ছাটাই বন্ধ, টিফিন ভাতা প্রদান, পিসি কমিটি গঠনসহ বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নে গত ১৬ নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করে সনিক ফ্যাক্টরীর শ্রমিকরা। তারই প্রেক্ষিতে গত ১৭ নভেম্বর মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সাথে বৈঠকের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন এবং শ্রমিকদের ১৮ নভেম্বর থেকে কর্মস্থলে যোগ দিয়ে নিজ নিজ কাজে নিয়োজিত হওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু শ্রমিকরা সেই আহ্বানে সাড়া না দেওয়ায় এবং উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটায় কারখানার নিরাপত্তার সার্থে বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯-এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য কারাখানা বন্ধ ঘোষণা বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত কারখানার পরিচালক মি. সু ইয়াংবাও (পোলো) স্বাক্ষর করেছেন।
উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং দ্রুত সমাধাণের চেষ্টা করা হবে।
নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষে একটি কমিটি গঠন করে দ্রুত শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান করা হবে।