আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাইতে বলল বাংলাদেশ

জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

আদালতের দরজায় টাঙানো হলো বিচারকের এগারোটি অনুরোধ

রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২, দুপুর ০৩:৫৪

Advertisement Advertisement

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড় প্রতিনিধি: দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আদালতের বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সময় সর্ব সাধারনের মাঝে বিভিন্ন ভ্রান্তি দূর করতে এক ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মতিউর রহমান।

আদালতের দরজায় টাঙিয়েছেন এগারোটি অনুরোধ। এতে করে আলোচনায় আবারো উঠে এসেছেন এই বিচারক। বিচারকের পর্যক্রমে ভিন্ন কার্যক্রমে সকলের কাছে শুভেচ্ছার পাত্র হয়ে উঠেছেন তিনি।

জানা যায়, একটা সময় আদালতকে নিয়ে মানুষের মুখে নানান জল্পনা, কল্পনার ও কুরুচি সম্পন্ন  কথা শোনা গেলেও বর্তমান সময়ে বিচারকের ভিন্ন পদক্ষেপে আদালতকে নিয়ে দূর হয়েছে বিভিন্ন দূশ্চিন্তা। অবশেষে আদালতে আসা বিচারপ্রার্থী মানুষের দূশ্চিন্তা দূরিকরণে নতুন এই পদক্ষেপে আরেকটি নতুন নজির স্থাপন করেছেন বিচারক মতিউর রহমান।

রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমান। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) পোষ্টের পর সকলের কাছে নতুন করে আবারও শুভেচ্ছা, ভালোবাসায় বাহবাহ পাচ্ছেন তিনি।

আদালতের দরজায় টাঙানো এগারোটি অনুরোধ হলোঃ-

১) ছোটখাটো বিরোধগুলো নিজেদের মধ্যে আপোষে মিমাংসা করুন। আপনার শিশু সন্তানের কথা বিবেচনা করে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্বগুলো মীমাংসা করুন। সংসার সমাজে ও পরিবারে শান্তি ফিরিয়ে আসবে। মামলা আপোষ হলে বিচারকের কাছ থেকে আপনি পাবেন দুইটি চকলেট। আর আপনার বিজ্ঞ আইনজীবীও পাবেন দুইটি চকলেট।

২) ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করিন প্রত্যেকটি মামলা শুনানির জন্য ডাক পড়বে।

৩) causelist.judiciary.org.bd এই লিংকে অত্র আদালতের প্রতিটি মামলার পরবর্তী তারিখ এবং ফলাফল দেয়া আছে। প্রয়োজনে আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে মোবাইলে এই লিংক থেকে আপনার মামলার প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন।

৪) অত্র আদালত হতে কোন সাক্ষীকে ফেরত দেওয়া হয় না। সমন পেয়ে সাক্ষী দিতে আসলে আদালতের ভিতরে পিছনের বেঞ্চে বসে দয়া করে অপেক্ষা করুন। যথাসময়ে আপনার মামলার ডাক পড়বে। সাক্ষ্য প্রদানে আপনাকে সহযোগিতা করা হবে।

৫) আপনি পরীক্ষার্থী হলে বা সামনে আপনার পরীক্ষা থাকলে অযথা সময় নষ্ট না করে আদালতের বারান্দায় রক্ষিত বেঞ্চে বসে বই বা নোট পড়তে পারেন। এজন্য সঙ্গে বই নিয়ে আসুন।

৬) এই আদালতের বিচারকের কাছে শিশুদের জন্য চকলেট আছে। শিশু কান্নাকাটি করলে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। দুগ্ধপোষ্য শিশু বা ছোট শিশু থাকলে তার মামলা আগে শুনানী করা হয়।

৭) নামাজের সময় দয়া করে অপেক্ষা করুন। নামাজের পর আপনার মামলার শুনানি হবে।

৮) পিছনের একটি বেঞ্চ সম্মনিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অসুস্থ্য বৃদ্ধ মানুষের বসার ব্যবস্থা আছে। দয়া করে তাদের বসতে সহায়তা করুন।

৯) এই আদালতে দীর্ঘ সময় ধরে মামলার শুনানি হয়। আদালতের নিচ তলায় ক্যান্টিনে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ক্ষুধা লাগলে নিজ টাকায় খেয়ে আসুন। টেনশন করবেন না, নিশ্চিত থাকুন- আপনার মামলার শুনানি হবে।

১০) আদালতে আসামীর কাঠগড়ায় ও হাজত থানায় আসামিদের পড়ার জন্য দুইটি বুক সেলফ আছে যা "আদালত পাঠাগার" নামে পরিচিত। আপনি প্রয়োজনে সেখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারেন।

১১) মনে রাখবেন, ন্যায়বিচার পাওয়া আপনার অধিকার কোন অনুকম্পা বা দয়া নয়।

এদিকে বিচারক মতিউর রহমান জানান, আমার নিজস্ব চিন্তা থেকে আমি এটা করেছি। এতে বিচারপ্রার্থী মানুষের দুশ্চিন্তা আদালত সম্পর্কে ভীতি দূর হচ্ছে এবং তারা ভালো ফল পাচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশে আমার আদালতেই আমি এমন ভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এর আগে আমি একাধীক পারিবারিক মামলার বিচ্ছেদের মধুর সমাপ্তি করেছি। গত বছর শীতে আদালতের আসামী কাঠগড়ায় কারপেটসহ চলতি বছরে আদালত কারাগারে অপেক্ষারত আসামীদের বই পড়ার জন্য দুটি কারা পাঠাগার স্থাপন করেছি।

তবে যাই কিছু করছি নিজের মনুষত্বকে জাগিয়ে কাজ গুলো করছি।

মন্তব্য করুন


Link copied