স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ জমির জাল দলিল চক্রের হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা। মঙ্গলবার(১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় ওই সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন খালিশাচাপানী এলাকার ভুক্তভোগী আবু ছায়েদ, আব্দুল মজিদ, রাজ্জাক বসুনিয়া, আলম হোসেন, কলিমুদ্দিন প্রমুখ। ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আবু ছায়েদ ।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, খালিশা চাপানি ইউনিয়নের বাইশপুকুর মৌজার দুই একর ৮৩ শতক জমির মালিক আবু ছায়েদ, আহসান উদ্দিন চৌধুরী ও প্রদীপ কুমার রায়। তারা ২০২১ সালে এম শামিমুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৭২২/২১ নম্বর দলিলমূলে ওই জমি ক্রয় করেন। কিন্তু সিরাজুল ইসলাম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জাল দলিল তৈরি করে ওই জমির মালিকানা দাবি করেন। যার দলিল নম্বর-১০৮৭/৬১। দলিল সম্পন দেখানো হয়েছে ১৯৬১ সালে। জাতীয় পরিচয়পত্রে সিরাজুল ইসলামের জন্ম তারিখ ৭ জুলাই ১৯৬৬।
ভুক্তভোগীরা নীলফামারী আমলী আদালতে ওই দলিলের সঠিকতা যাচাইয়ে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ডিমলা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পুলিশের তদন্তে জেলা রেজিস্ট্রার কার্যালয় ও রংপুর জেলা মহাফেজখানায় ১০৮৭ নম্বর দলিলের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। দলিলটির জাবেদা নকলের ছায়া কপিটিতে সাব- রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরের সাথে মিল পাওয়া যায়নি। এতে প্রতীয়মান হয় যে, জাবেদা নকলটিও সঠিক নয়।
তারা জানান, ডিমলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে এম শামিমুজ্জামানকে ওই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। ওই নামে হাল রেকর্ডও (সর্বশেষ খতিয়ান) হয়েছিল। ৭২২/২১ নম্বরে সম্পাদিত দলিলটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দলিল গ্রহীতা আবু ছায়েদ, আহসান উদ্দিন চৌধুরী ও প্রদীপ কুমার রায়।
তারা বলেন, জাল দলিল চক্রের মূল হোতা সিরাজুল ইসলাম একটি প্রতারক চক্রের মাধ্যমে প্রভাব খাটিয়ে তাদের মালিকানা জমি জোড়পূর্বক দখলের চেষ্টা করছে। জমি দখলের উদ্দেশ্যে তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগি আবু ছায়েদ বলেন, সিরাজুল ইসলাম একজন প্রতারক চক্রের সদস্য, দখল ও মামলাবাজ প্রকৃতির লোক। সাব রেজিস্ট্রার অফিসের বর্তমান ও পুরোনো আমলের দলিল, সিলমোহর ও স্বাক্ষর নকল করে জাল দলিল তৈরি করে তারা দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের জমি দখল করে আসছে। আমাদের মতো অনেকের জমি-জমা এভাবে জোর করে দখল করে হয়রানি করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমরা তার বিচার দাবি করছি।
অপর ভুক্তভোগী আলম হোসেন বলেন, আমার ৭১ শতক জমি জাল দলিল করে দখল করে খাচ্ছে সিরাজুল ইসলাম। তার নেতৃত্বে এলাকায় জমিদখলদার একটি চক্র গড়ে উঠেছে। আমার মতো অনেকের জমি-জমা এভাবে জোর করে নিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি ওই জমির প্রকৃত মালিক এবং দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছি। আদালতে মামলা নিষ্পত্তি না করে উল্টো তারাই আমার জমি জোড়পূর্বক দখল করে নিয়েছে’।