আর্কাইভ  শনিবার ● ২৩ আগস্ট ২০২৫ ● ৮ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৩ আগস্ট ২০২৫
রাজনীতিতে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ

♦ যোগাযোগ রাখছেন কেন্দ্রেও
♦ নির্বাচনে আগ্রহীরা ঘুরছেন এলাকায়
রাজনীতিতে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ

মা–বাবার সঙ্গে দুই ছেলের একসঙ্গে যাত্রা, একসঙ্গেই মৃত্যু

কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনা
মা–বাবার সঙ্গে দুই ছেলের একসঙ্গে যাত্রা, একসঙ্গেই মৃত্যু

নারী কাণ্ডে চাকরি হারালেন বেরোবি সমন্বয়ক রহমত

নারী কাণ্ডে চাকরি হারালেন বেরোবি সমন্বয়ক রহমত

চীন যাচ্ছেন নাহিদসহ এনসিপির ৮ নেতা

চীন যাচ্ছেন নাহিদসহ এনসিপির ৮ নেতা

ঢাকা-কুড়িগ্রামের দূরত্ব কমবে ১৩৫ কিমি

শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, সকাল ০৯:০৮

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: মাত্র দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতুর কল্যাণে রাজধানীর সঙ্গে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের সঙ্গে দূরত্ব কমে আসবে ১৩৫ কিলোমিটারের বেশি। সহজ ও এবং কম সময়ে এসব এলাকার কৃষিপণ্য এখন পৌঁছে যাবে ঢাকায়। এতে ন্যায্যমূল্য পাওয়ার আশা দেখছেন উৎপাদকরা। এছাড়া প্রতিবেশী জেলা গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের যোগাযোগ আরও সহজ হবে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বলছিলাম গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাট থেকে তিস্তা নদীর ওপর দিয়ে চিলমারী উপজেলা পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় তিস্তা গার্ডার সেতুর কথা। এটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। জুলাইয়ের শেষে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের এ সেতুটির উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে নবনির্মিত এ সেতুটির প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা জানান।
 
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুটির নির্মাণে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে চায়না স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। সেতুটিতে ২৯০টি পাইল ও ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সেতুর উভয়পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং সাড়ে ৩ কিলোমিটার এলাকা স্থায়ীভাবে নদী শাসনের কাজ করা হয়েছে। এছাড়া অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রায় ১৩৩ একর জমি।
 
তিস্তাপারের বাসিন্দারা বলছেন, হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতুর কাজ শেষ হলে এটি হবে উত্তরাঞ্চলের নদী তীরে মানুষের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। যাতায়াত ও কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে। নিশ্চিত হবে ফসলের ন্যায্য মূল্য। দুই পাশে নদী শাসন করায় কমবে তিস্তার ভাঙন। একই সঙ্গে নদীপারের হাজারও মানুষের ব্যবসার প্রসার ঘটবে। চিকিৎসা, শিক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে এই সেতুর মাধ্যমে।

যোগাযোগ হবে আরও সহজ

দীর্ঘ প্রত্যাশিত এই সেতুটি খুলে দেয়া হলে উত্তরাঞ্চল তথা গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গেও কুড়িগ্রামের দূরত্ব প্রায় ১৩৫ কিলোমিটার কমবে এবং এলাকার কৃষিপণ্য বাজারজাত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হবে।
 
সেতুটির উদ্বোধন হলে এই অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
 
গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দারা জানান, আগে প্রতিবেশী জেলা কুড়িগ্রামে যেতে ঘুরপথে লালমনিরহাট হয়ে যাওয়া লাগত। এখন সহজেই দুই জেলার বাসিন্দাদের আসা-যাওয়া সহজ হবে। কয়েক ঘণ্টার পথ নেমে আসবে কয়েক মিনিটে।
 
সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ঘাট এলাকার বাসিন্দা রফিক বলেন, আগে চিলমারী ঘাটে যেতে নদী পার হতে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লাগতো। এখন কয়েক মিনিটেই আমরা ওপারে চলে যেতে পারবো। এছাড়া কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনাসহ অন্যান্য কাজও সহজ হবে।
 
কুড়িগ্রামের পরিবহন শ্রমিকদের দেয়া তথ্যমতে, তিস্তা গার্ডার সেতুর কল্যাণে এখন রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াতে ২ ঘণ্টার মতো সময় কম লাগবে। আগে যেখানে ৮ ঘণ্টার বেশি সময়ে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা আসতে হতো, সেখানে ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছা যাবে বলে জানিয়েছেন তারা।
 
উল্লেখ্য, তিস্তা পাড়ের মানুষের দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম ও দাবির প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে তিস্তা সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হলেও নানা জটিলতা কাটিয়ে ২০২১ সালে পুরোদমে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে অবকাঠামোর কাজ শেষ হলে সেতুটি চলতি বছরের ২৪ জুন উদ্বোধনের কথা ছিল। তবে কিছু অসমাপ্ত কাজের কারণে উদ্বোধনে দেরি হয়।

মন্তব্য করুন


Link copied