নিউজ ডেস্ক: সারাদেশে চলমান বিভিন্ন সাম্প্রতিক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, অস্থিতিশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটের মতো নাশকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশের সব বিমানবন্দরকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক জরুরি চিঠির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সব বিমানবন্দরে বাড়তি সতর্কতা গ্রহণের নির্দেশনা পাঠানো হয়। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দেশের সব বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনার পর থেকে দেশের সব বিমানবন্দরে কড়া নিরাপত্তা জোরদার শুরু করে দিয়েছে সংশিষ্ট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
নির্দেশনায় বলা হয়, সব বিমানবন্দরের সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি, ভেহিক্যাল পেট্রোল, ফুট পেট্রোল বাড়ানোসহ মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। সম্ভাব্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখতে হবে সেইসাথে বিমানবন্দর এলাকায় সর্বোচ্চ সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন, প্রত্যেক ব্যক্তির তল্লাশি জোরদার এবং অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা সবসময় প্রস্তুত রাখার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর—ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট—এবং পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর—কক্সবাজার, রাজশাহী, যশোর, বরিশাল ও সৈয়দপুর—বেবিচকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে।
চিঠিতে আরও যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে–
ক. কেপিআই নিরাপত্তা নীতিমালা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
খ. বিমানবন্দরে শুধু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অনুমোদিত যাত্রীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং জনসাধারণের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
গ. বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে হবে।
ঘ. বিমানবন্দরের প্রবেশ ও প্রস্থান পথে র্যান্ডম নিরাপত্তা তল্লাশি করতে হবে।
৬. যাত্রী, ক্যাবিন ব্যাগেজ, কার্গো ও যানবাহনের যথাযথ তল্লাশী নিশ্চিত করতে হবে।
চ. বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে স্পর্শকাতর এলাকা ও সীমানা প্রাচীর এলাকায় নিয়মিত ও ঘন ঘন নিরাপত্তা টহল পরিচালনা করতে হবে।
ছ. নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি (যেমন- স্ক্যানার, মেটাল ডিটেক্টর, সিসিটিভি ইত্যাদি) প্রতিদিন পরীক্ষা করে তাদের কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
জ. দায়িত্ব পালনের পূর্বে নিরাপত্তা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়মিতভাবে ব্রিফিং প্রদান করে সর্বদা সতর্ক অবস্থায় রাখতে হবে।
ঞ. কোনো সন্দেহজনক ব্যক্তি, বস্তু বা কার্যকলাপ শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
ট. সিসিটিভি মনিটরিং সেল ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় রাখতে হবে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঠ. গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাসমূহ পরিদর্শনপূর্বক অগ্নি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
ড. বিমানবন্দরের অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রস্তুতি ও সতর্কতা ২৪/৭ সক্রিয় রাখতে হবে।
মঙ্গলবার(১১ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেবিচকের জনসংযোগ কর্মকর্তা কাউছার মাহমুদ।
তিনি জানান, চলমান পরিস্থিতিতে বিমানবন্দরগুলোতে যেন কেউ ঝুঁকির মুখে না পড়ে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।