স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী নীলফামারীর তৃতীয় সাংস্কৃতিক উৎসব। এ উৎসবকে ঘিরে নানা আয়োজনে বর্ণিল সাজে সেজে উঠেছে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। বর্ণিল আয়োজন মনে করিয়ে দিচ্ছে বাঙালির লোকজ ইতিহাস আর ঐতিহ্য।
শনিবার(১৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এই উৎসবের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি। বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রার পরেই বেলুন ও শান্তির প্রতিক পায়রা উড়িয়ে শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে উদ্ধোধন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় এই উৎসব। উদ্ধোধন অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পীরা।
এ সময় নতুন চিন্তা, নতুন ভাবনা,নতুন আশার উৎপত্তি থেকে রঙ্গের মেলায় মেতে উঠে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, নীলফামারীর প্রাঙ্গণ।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে শিল্প ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেলা পর্যায়ে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দ্বিতীয়বারের মতো দৈনিক জনকন্ঠের স্টাফ রির্পোটার তাহমিন হক ববী সহ ৪৫ জনগুনী ব্যাক্তিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০১৪-২০২২ প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি বলেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়েছে। জাতির পিতা যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন।
স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক (উপসচিব) সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাদুজ্জামান নুর প্রতিজনকে একটি করে সনদ, ক্রেষ্ট ও চেকের মাধ্যমে দশ হাজার টাকা করে প্রদান করেন। অন্যান্য গুনী ব্যাক্তিরা হলেন লুৎফর রহমান, ধনঞ্জয় রায়, সুধাংশু কুমার রায়, ইলিয়াস হোসেন, এস এ রহমান, শেখর রঞ্জন দে, মনমথ রায়, ওবায়দুর রহমান, জান্নাতুল ইসলাম কবির, আব্দুল বারী, জাকারিয়া হোসেন রাজু, লালু রাম প্রসাদ রায়, অসিত কুমার ধর, আবুল কালাম আজাদ, দুলাল ভট্রাচার্য, আতাউর রহমান মুকুল, সৈয়দা আঞ্জুমান ইয়াসমিন,প্রদীপ চন্দ্র সরকার, সুবল চন্দ্র বয়াতী, আনোয়ার হোসেন, গৌতম কুমার দে, রতœা চৌধুরী, ফারুক ভুঁইয়া, ডোমার সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ,বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গফ্ফার ,মীর সরওয়ার আলী, রকিবুল আলম শাহিন, মাহাদুল হক, বিনয় কুমার রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, দুলাল চন্দ্র রাজবংশী,ইফ্ফাত জামান, শ্রী অমল সাহা, কামরুল হক সুজা মৃধা, মাহফুজার রহমান, দেব কুমার নাগ, ধীরেন ঋশী, তরুন কুমার রায়, জাহাঙ্গীর আলম সরকার, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মুহাম্মদ ঈশা আলী, ভুপেন্দ্র নাথ রায়, হোসনে আরা ও আরমিন আক্তার।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মমতাজুল হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ প্রমুখ।
জেলা কালচারাল অফিসার কে,এম আরিফউজ্জামান জানান, সপ্তাহব্যাপী উৎসবে রয়েছে আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান, নৃত্যবিষয়ক সেমিনার ও স্মৃতিচারন, নৃত্য উৎসব, যন্ত্র সঙ্গীত বিষয়ক সেমিনার ও উৎসব, ভাওয়াইয়া সেমিনার ও উৎসব, লোক ও বাউল সেমিনার ও উৎসব, নাট্য উৎসব, কবিতা উৎসব এবং শাস্ত্রীয় সঙ্গীত উৎসব এবং জেলার ঐতিহ্যবাহী ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে এবারের সাংস্কৃতিক উৎসব। এসব সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞে অংশ নিচ্ছেন জেলার ৬ উপজেলার শিল্পী ও সংগঠন। তিনি আরও জানান, যে ৪৫ জনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে তারা সঙ্গীত, চারুকলা, নাট্যকলা, যাত্রাশিল্প,লোকসংস্কৃতি,ফটোগ্রাফি, সৃজনশীল সাংস্কৃতিক সংগঠক, যন্ত্রসঙ্গীত ও আবৃত্তিতে বিশেষ অবদান রেখেছেন এ জেলায়।