আর্কাইভ  শুক্রবার ● ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ● ১৬ কার্তিক ১৪৩২
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ৩১ অক্টোবর ২০২৫
বিশেষ চরিত্রে বড় শিল্পীরা

বিশেষ চরিত্রে বড় শিল্পীরা

মোবাইল অ্যাপে ঋণের নামে প্রতারণা

মোবাইল অ্যাপে ঋণের নামে প্রতারণা

প্রতীক তালিকায় 'শাপলা কলি' যুক্ত হওয়া মূলত এনসিপিকে বাচ্চা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা

প্রতীক তালিকায় 'শাপলা কলি' যুক্ত হওয়া মূলত এনসিপিকে বাচ্চা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা

আগে রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার পড়ি, পরে মন্তব্য : প্রেসসচিব

আগে রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার পড়ি, পরে মন্তব্য : প্রেসসচিব

বাজার এখনো অশান্ত নাগালের বাইরে গরিবের পুষ্টি

মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, রাত ১২:৫৬

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে পুষ্টিসমৃদ্ধ মাছ মাংস ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। আয়-বৈষম্যের প্রভাবে পাত থেকে আগেই বাদ দিতে হয়েছে গরুর মাংস। নাগালে থাকা মাছের মধ্যে কই, তেলাপিয়া, নলাও এখন দামি মাছ হয়ে উঠেছে। গত এক বছরে এসব মাছের দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৪৫ শতাংশ। ফলে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকায়। পাশাপাশি মাছের বিকল্প হিসেবে পুষ্টির সহজলভ্য উৎস ছিল ডিম-মুরগি। দামের বড় পরিবর্তনের জন্য তাও যেন ক্ষীণ হয়ে আসছে। এর মধ্যে খাদ্যমূল্য স্ফীতির নাভিশ্বাস পরিস্থিতি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষকে বাধ্য করছে মাছ-মাংসের খরচ কমাতে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্যানুসারে গত বছরের একই সময়ে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছিল ৫০ টাকায়। বর্তমানে একই দামে ডিম বিক্রি হলেও মাছ-মুরগির দামে এসেছে বেশ পরিবর্তন। ফলে বছরে প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম বেড়েছে অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা।

সরেজমিনে ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে এখন ৬০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। যা এক বছর আগেও বিক্রি হয়েছিল ১৪০ থেকে ১৯০ টাকায়। কেবল তেলাপিয়া মাছই নয়, দাম বেড়ে প্রতি কেজি নলা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা ও চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ও মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে ১৪০ টাকার লইট্টা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকায়। তাছাড়া ১৫০ টাকার ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৮৫ টাকায়। মহাখালী কাঁচা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা মামুন হাসান বলেন, ক্ষুধা মূল্যস্ফীতি বোঝে না। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে হয়। খরচের তুলনায় আয় না বাড়লেও সংসার চালিয়ে নিতে অনেক কিছুই বাদ দিচ্ছি। আগের থেকে পাতলা করেছি মাছের পিস। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) গবেষণা বলছে, ৮০ শতাংশ পরিবার সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ পরিবারের গড় আয়ের চেয়ে গড় খরচ ২৫০০ টাকা বেশি। এসব পরিবারের মধ্যে ৫২ শতাংশ ঋণের ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি পরিসংখ্যান ব্যুারো জানিয়েছে, দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮.৫৫ শতাংশ হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে বেশি পরিবর্তন হয়েছে খাদ্য মূল্যস্ফীতির। গত জুলাইয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। জুনে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ জুলাই-আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়েছে শূন্য দশমিক ১৭ শতাংশ। সে অনুযায়ী মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে গেল তিন বছর থেকে চলতে থাকা আয় বৈষম্যের মানুষের জীবন মানের ওপর চাপ পড়ছে এবং এটি প্রকাশ্যে এসেছে। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বিআইডিএসের নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী বলেন, দেশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি চলছে। এতে সব থেকে বেশি আক্রান্ত হয়েছে সমাজের নিম্ন বিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর মানুষ। অধিকাংশ পরিবার ঋণ নিয়ে চলছেন। আগস্টের পর যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। ইন্টারিম সরকারের সংস্কার অগ্রগতি না থাকায় দিন দিন অস্থিরতা বাড়ছেই। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এই পরিস্থিতিতি থেকে উত্তরণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন


Link copied