স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যদি কোনো নেতার অন্তরে সততার আলো থাকে, তার বিরুদ্ধে হাজার অভিযোগ করেও সেফ এক্সিটের দরকার হয় না। বেগম খালেদা জিয়ার সেফ এক্সিটের দরকার পড়েনি, কারণ তিনি অন্তরের আলোতে আলোকিত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের পাগলাটারি গ্রামে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’এর এক সহায়তা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা হয়েছে, নানা অভিযোগ আনা হয়েছে, কিন্তু তিনি দেশের মাটিতেই থাকতে চেয়েছেন। তিনি কখনোই সেফ এক্সিট চাননি। তিনি আরও বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা সমালোচনা আছে, তবে উপদেষ্টারা সেটিকে উন্নত করার চেষ্টা করছেন। এখন অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। কর-জিডিপি অনুপাত কমছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে না, শিল্পকারখানা বন্ধ হচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের সময় নানা প্রকল্পের আড়ালে হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব কাজের সমালোচনা করার আছে, আমরা তা করব। তবে তাদের ভালো দিকও তুলে ধরব। আমরা চাই না সরকার ব্যর্থ হোক, বরং দায়িত্বশীলভাবে দেশ পরিচালনা করুক। কেউ যদি দুর্নীতি বা অপরাধে জড়িত থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছি, যেখানে দেশের ভবিষ্যতের করণীয় তুলে ধরা হয়েছে। রাজনীতিতে যে অপসংস্কৃতি ও দুর্নীতির বিস্তার ঘটেছিল, তা বন্ধ করা এখন সময়ের দাবি। ব্যাংকগুলো এখন ঋণ দিতে পারছে না, কারণ ব্যাংকে টাকা নেই। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যে ভিশন, তা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও আলোচিত হয়েছে। রিজভী আরও বলেন, আমরা নতুন চিন্তা ও নতুন স্বপ্ন নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিশনেই আমাদের ভবিষ্যৎ রাজনীতি এগিয়ে যাবে। জনগণই শেষ পর্যন্ত বিচার করবে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বেবী নাজনীন, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুর গফুর সরকার, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আক্তার, সাবেক সংরক্ষিত এমপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি ও সংগঠনটির সদস্য মাসুদ রানা লিটন, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুল হক সাজু ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল-মামুন সহ স্থানীয় সহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের পাগলাটারি গ্রামের মোস্তাকিন আলী প্রায় তিন যুগ ধরে বুক দিয়ে ঘানি টেনে সংসার চালাচ্ছেন। তার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ‘আমার বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে মোস্তাকিনকে দুইটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান ও গরুর ক্রয়ের জন্য নগদ অর্থসহ সহায়তা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত সৈয়দপুর (সাংগঠনিক) জেলায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন ও শহীদ নাঈম বাবুর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে আর্থিক অনুদান দেয় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
এর আগে স্থানীয় এক ব্যক্তি মোস্তাকিনকে একটি টিনের ঘর ও বিদ্যুৎচালিত মেশিন দেন। ইকু গ্রুপের পক্ষে ২০ হাজার টাকা, উপজেলা প্রশাসনও বৃদ্ধ মোস্তাকিনকে সহায়তা করেছে।