আর্কাইভ  সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫ ● ১০ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৫ আগস্ট ২০২৫
সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি

বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

► এক চুক্তি, চার সমঝোতা স্মারক ও এক কর্মসূচি সই
একাত্তর ইস্যু দুবার মীমাংসিত, বললেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী
বহুমুখী নিবিড় সম্পর্কে ঐকমত্য

রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

উল্টো বাড়ছে দিনদিন, চলছে শুধুই আলোচনায়
রোহিঙ্গা ঢলের ৮ বছর আজ, ফেরানো গেল না একজনও

“ ১০টি বাসের মধ্যে সার্ভিস দিচ্ছে মাত্র ৫টি “

বেরোবিতে পরিবহন সংকট, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে

শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, রাত ১১:১১

Advertisement Advertisement

বেরোবি প্রতিনিধি ;  বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের পরিবহন সংকট দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য ১০টি বাসের মধ্যে সার্ভিস দিচ্ছে মাত্র পাঁচটি। বাসগুলোর মধ্যে দুটি অনেক দিন থেকে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। আর উপহার হিসেবে পাওয়া বাসটি চুরির অভিযোগে তদন্তনাধীন। একটি বাস কর্মচারীদের জন্য ও একটি সব সময় রিজার্ভ রাখা হয়। ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং পরিবহন পুলের তথ্য মতে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত হাজার। তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দ থাকা ছয়টি বাসের সিট প্রায় ২৯৬। মোট শিক্ষার্থী ও বাস সংখ্যার হিসাবে ১ হাজার ২৩০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি বাস এবং ২৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি সিট বরাদ্দ রয়েছে। প্রতিদিনই আসনের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী নিয়ে বাস চলাচল করে। ফলে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরজার সামনে ঝুলে যাতায়াত করতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর হলেও তাদের এই ভোগান্তির কবে নিরসন হবে তা নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে তারা অনেকবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ জানালেও তা নিরসনে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।

প্রতি বছর বিদ্যাপীঠে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও একটি নির্মাণাধীনসহ মাত্র চারটি হলে বাড়েনি আবাসন সংখ্যা। আবাসন সংকট থাকায় প্রায় ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস থেকে দূরে রংপুর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বাসা বা মেস ভাড়া করে থাকেন। এসব স্থানে থেকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যেতে বেরোবির পরিবহনের ওপর নির্ভর করতে হয়।

শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি রুটের অনুমোদন থাকলেও বাস সংকটের কারণে বর্তমানে পাঁচটি রুট চালু আছে। অনেক বাসে নেই ঠিকঠাক দরজা, জানালার কাচ ভাঙা, সিট ছেঁড়া, ফ্যান নষ্ট। ছাত্রীদের জন্য আলাদা কোনো বাস না থাকায় একসঙ্গে গাদাগাদি করে ঝুলে যাতায়াত করতে হয়।

দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকা দুটি বাস মেরামতের জন্য সাবেক উপাচার্যের আমলে ইউজিসি অর্থ দিয়েছিল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পরবর্তী সময়ে বর্তমান উপাচার্য বাস দুটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়ে কমিটি গঠন করেন। কাজ ঠিকাদারকে দেওয়ার জন্য পরপর তিনবার টেন্ডার দিয়েও ঠিকাদার পাওয়া যায়নি। এরপর চতুর্থবার টেন্ডার দেওয়া হলে ঠিকাদার পাওয়া যায়।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনের সংকটে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে বাধ্য হয়ে শহরের মেস কিংবা বাসাবাড়িতে থাকতে হয়। এদিকে বাস সংকটের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ায় জায়গা না পাওয়ায় অনেককেই অটোরিকশার ওপর নির্ভর করতে হয়। এজন্য শিক্ষার্থীদের গুনতে হয় বাড়তি টাকা।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা একবার বাসে ঝুলে ক্যাম্পাসে আসে আবার ক্লাস শেষ করে বাদুড়ঝোলা হয়ে বাসায় যান। যেখানে একটা বাসে সিট সংখ্যা ৫২টি সেখানে যাত্রী উঠে ১০০ জনেরও বেশি। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল পরিচালক মো. মাসুদ রানা বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি ডাবল ডেকার বাস উপহার দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা কাছে আবেদন করেছি, চারটি ব্যাংকের কাছে বাস চেয়ে আবেদন করেছি। নতুন রুটপ্ল্যান করে ১৫টি বাসের জন্য ইউজিসির কাছে আবেদন করেছি। শিক্ষার্থীদের জন্য শনিবারে দুটি ট্রিপ চালু করেছি।

তিনি আরো জানান, হাজির হাট রুটে দুটি ট্রিপের বদলে চারটি ট্রিপ এবং এই রুটের ট্রিপ পাগলাপীর পর্যন্ত বর্ধিত করেছি। শিক্ষকদের ও কর্মকর্তাদের একটি করে নতুন রুট চালু করেছি। পরিবহন নীতিমালা প্রণয়ন করেছি এবং সেটা সিন্ডিকেটে পাস হয়েছে। পরিবহন নিয়মিত মেরামত ও যন্ত্রাংশ কেনার জন্য পরিচালককে (অর্থ ও হিসাব) আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করা হয়েছে।

বর্তমান সব কেনাকাটা ও মেরামত কমিটির মাধ্যমে হচ্ছে, আগের মতো এককভাবে কেউ করতে পারছে না। দপ্তরের স্বচ্ছতা আনার জন্য যা যা করার আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ভোগান্তি লাঘবের জন্য আমরা অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আশা করছি এই বছরের মধ্যে পরিবহনের অনেক সমস্যার সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করুন


Link copied