আর্কাইভ  রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫ ● ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫
জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

বেরোবির সাংবাদিকতা বিভাগ আন্দোলনে আসতে শিক্ষার্থীদেরকে হুমকি-ধমকি!

মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪, বিকাল ০৫:২৭

Advertisement Advertisement

বেরোবি প্রতিনিধি : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে দুই দিন ধরে চলছে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভে বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করলে নামের তালিকা জমা দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। হুমকির মুখে গতকাল প্রশাসন ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা বলেও অভিযোগ রয়েছে। হুমকি দেয়া সংক্রান্ত একটি ভাইরাল স্ক্রিনশট সোমবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। তবে নামের তালিকা করে কার কাছে জমা দেয়া হবে ওই স্ক্রিনশটে দেখে তা জানা যায়নি।

গতকাল (৬ মে) সন্ধ্যায় ভাইরাল হওয়া ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপের একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের নাম উল্লেখ করে তাদের দ্রুত প্রশাসনিক ভবনে আন্দোলনে আসতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। না আসলে আন্দোলনে না আসা শিক্ষার্থীদের নামের লিস্ট জমা দেয়ার হুমকি দেয়া হয় ওই স্ক্রিনশটে।

স্ক্রিনশটটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘দারুণ সি আর নোটিশ! কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে আন্দোলনের নামে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার নীলনকশায় মেতে উঠেছে কুচক্রী মহল।’

আরেক শিক্ষার্থী তার পোস্টে লিখেছেন, এই লিস্ট দ্রুত জমা দেওয়া হোক। কিন্তু কোথায় জমা দেয়া হবে?? আমরাও হেড অফিসটা দেখতে চাই। এই পোস্টের মন্তব্যের ঘরে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘খুবই দু:খজনক। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতা অপব্যবহার করে। শিক্ষাবহির্ভূত কাজে লাগানো নিন্দনীয় কাজ।’ আরেক শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, ‘শিক্ষার্থী নিয়ে আর কতো নোংরা রাজনীতি চলবে?’

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা আমাদের বিভাগের এক স্যারের কাছের স্টুডেন্ট হিসেবে বিভাগে পরিচিত। যেখানে বিভাগের অন্য শিক্ষকরা ওই শিক্ষকের ভয়ে বিভাগীয় প্রধান নিচ্ছেনা সেখানে আমরা তো সাধারণ শিক্ষার্থী। আমাদের দরকার বিভাগীয় প্রধান। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত বিভাগীয় প্রধান দিক এবং সেটা আইন মেনেই। কোন শিক্ষকের ভয়ে এমন হচ্ছে জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী নাম বলতে রাজি হয়নি।

গত রবিবার সাত দিনের সময় নিয়ে আবারও আন্দোলনে নেমে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করার যৌক্তিকতা ছিলো কিনা প্রশ্নের জবাবে ওই শিক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের বিভাগের সিনিয়ররা আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেয় সেটাই করতে হয়। নাহলে লিস্ট জমা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। 

সূত্রে জানা যায়, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলামের মেয়াদ শেষ হয় এ বছরের ১০ মার্চ। এরপর দায়িত্ব দেওয়া হয় একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নিয়ামুন নাহারকে। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সহকারী অধ্যাপক রহমতুল্লাহকে দায়িত্ব দেয় প্রশাসন। তিনিও অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে সহকারী অধ্যাপক সারোয়ার আহমেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তিনিও দায়িত্ব নেননি।

এদিকে ‘অবৈধ শিক্ষকের বিভাগীয় প্রধান হওয়ার হুমকী চলছে!’ শিরোনামে ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন একই বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মাহমুদুল হক। তিনি পোস্টে লিখেছেন, ‘অবৈধ শিক্ষকের বিভাগীয় প্রধান হওয়ার হুমকী চলছে! জালিয়াতি করে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না --মহামান্য হাইকোর্ট অবৈধ শিক্ষকের নিয়োগের ব্যাপারে এ রুল ও আদেশ জারি করেছেন। আবার দুদক ও ইউজিসি'র চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় তথ্যানুসন্ধান কমিটি এর রিপোর্টে বলেছে তার নিয়োগের সুপারিশই নেই। উল্লেখ্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশ ছাড়া নিয়োগের কোন এখতিয়ার সিন্ডিকেটের নেই। তাহলে ১১ বছর ধরে অবৈধভাবে চাকরি করলো আর এখন বিশ্ববিদ্যালয় নিজেই দেখলো তার নিয়োগই নেই, এরপরও শিক্ষক হিসেবে বেতন-ভাতা পায় কীভাবে আমার মাথায় আসে না। এরপর সে বিভাগের প্রধান হওয়ার জন্য হুমকী দিচ্ছে। নিয়োগই নেই, আবার চায় বিভাগীয় প্রধান হতে। নদী যখন ভাঙছে তখন নদীর কিনারায় বিল্ডিং বানানোর চেষ্টা! বালির বাঁধ আর কি।’ 

‘হুমকির মুখে’ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হতে চাচ্ছেন না কেউ। পরপর তিনজন শিক্ষক এ দায়িত্ব গ্রহণে অপারগতা জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিভাগীয় প্রধানের পদ প্রায় দুই মাস শূন্য রয়েছে।

অপরদিকে দ্রুত বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। সোমবার তারা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে একই দাবি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গঠিত তিন সদস্যের কমিটি এদিন উপচার্যের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. শফিক আশরাফ বলেন, ‘আমরা প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ডিন কমিটির সভায় তা উন্মোচন করা হবে। এ বিষয়ে এখন কিছু বলা যাবে না। তবে আশা করি, শিঘ্রই শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।’

মন্তব্য করুন


Link copied