নিউজ ডেস্ক: নেপালে টানা বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুরু হওয়া প্রতিবাদ মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই রূপ নেয় ভয়াবহ গণআন্দোলনে। পুলিশের টিয়ারশেল, রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস—কোনো কিছুই থামাতে পারেনি হাজারো তরুণ-তরুণীর স্রোত। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। অবশেষে চাপের মুখে প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওডেলের হাতে পদত্যাগপত্র জমা দিতে বাধ্য হন অলি।
তবে সরে দাঁড়িয়েও ভারতের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সেনা ছাউনিতে আশ্রয় নেওয়ার পর দলের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে অলি দাবি করেছেন, “আমি যদি লিপুলেখ সীমান্ত নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম, যদি অযোধ্যা প্রসঙ্গে সত্য না বলতাম, তবে আজও ক্ষমতায় থাকতাম।”×
অলির অভিযোগ, ভারতের বিরোধিতার কারণেই তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটি কেবল রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং ইতিহাস ও সংস্কৃতির সত্য রক্ষার লড়াই।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালেই অলি বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন যে ভগবান রামের জন্মস্থান ভারত নয়, বরং নেপালের থরি গ্রামের কাছে। তার দাবি, অযোধ্যা উত্তরপ্রদেশ নয়, নেপালের ভূখণ্ডেই অবস্থিত। এমনকি তিনি সীতা-রামের বিয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রাচীন যুগে এত দূরে বিয়ে হতো না, রাম আসলে নেপালেই জন্মেছিলেন।” ওই মন্তব্যে ভারতজুড়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছিল।
অলির নেতৃত্বে নেপাল একাধিকবার ভারতের সীমান্ত নীতি ও সাংস্কৃতিক প্রতীককে চ্যালেঞ্জ করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, অলির পতন শুধু গণআন্দোলনের ফল নয়, এর পেছনে ভারতের সক্রিয় ভূমিকা থাকতে পারে। তাদের মতে, মোদি সরকার সরাসরি দখল না করলেও কাঠমান্ডুকে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে।