আর্কাইভ  রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫ ● ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫
জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

রংপুরে বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃক বসতভিটা ও আবাদী জমি থেকে উচ্ছেদ পাঁয়তারা বন্ধের দাবি

রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সকাল ০৯:২১

Advertisement Advertisement

মমিনুল ইসলাম রিপন: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নে বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃক স্থানীয় বাসিন্দাদের বসতভিটা ও আবাদী জমি থেকে উচ্ছেদের অপতৎপরতার প্রতিবাদে  শনিবার দুপুরে রংপুর নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন  করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বসতভিটা ও আবাদী জমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির উপদেষ্টা এ্যাড. পলাশ কান্তি নাগ। 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আরমান ইসলাম, আবুল কালাম, রফিকুল ইসলাম, তাওফুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, মোজাম্মেল হক, মোকতার হোসেন, মুশফিকুর রহমান, আফজাল হোসেন প্রমুখ। 

লিখিত বক্তব্যে বলেন, গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ও মর্ণেয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদী বেষ্টিত এলাকার অনেক জমি অব্যাহত নদী ভাঙ্গনের ফলে ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। এই সম্পত্তিতে বংশ পরম্পরায় অত্র এলাকার মানুষ  চাষাবাদ করে আসছে। পূর্ব পুরুষের নিকট থেকে ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমিতে ধান, আলু, মিষ্টি কুমড়া, চিনা বাদাম, পিঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। নদী ভাঙ্গনসহ প্রাকৃতিক নানা প্রতিকূলতাকে মোকাবিলা করে অভাব-অনটনের মধ্য দিয়েই তাদের  জীবন অতিবাহিত হয়। সম্প্রতি “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড” এর নামে বসুন্ধরা গ্রুপ  ছালাপাক ও আলাল মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানভূক্ত কৃষি জমি বেআইনীভাবে জোরপূর্বক দখলের পাঁয়তারা করছে। পাশাপাশি দলিল অথবা রেকর্ডীয় মালিকগণের বসতভিটা ও আবাদী জমি নামমাত্র মূল্যে গরীব-অসহায় মানুষদের বিক্রয়ে বাধ্য করছে। ইতিমধ্যে বসুন্ধরা গ্রুপ গজঘণ্টা ইউনিয়নের ছালাপাক ও আলাল মৌজায় “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী” স্থাপনের জন্য প্রায় ২ হাজার একর খাস জমি প্রতীকি মূল্যে বন্দোবস্তের জন্য জেলা প্রশাসক রংপুর বরাবর আবেদন করেছেন। সেই সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের দাবি অনুযায়ী তিস্তা নদীর তীরবর্তী তাদের ক্রয়কৃত ১ হাজার ৪০০ একর ভুমি উন্নয়নে বালু ভরাটের আবেদন করেছেন। ওই ১ হাজার ৪০০ একর জমি ক্রয়ের দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পানির দরে বসুন্ধরা গ্রুপ তিস্তা চরাঞ্চলের জমি ক্রয় করছে। স্থানীয় দালাল ও প্রভাবশালীদের সহায়তায় ২ কেজি খাসির মাংসের মূল্যে অর্থাৎ ১৮০০/২০০০ টাকায় ১ শতক জমি ক্রয় করছে।
যার ফলে এলাকার মানুষ  আতংকিত ও উদ্বিগ্ন। কথিত শিল্পায়নের নামে তা সুস্পষ্টভাবে কৃষি জমি ধ্বংসের নামান্তর। কৃষকের শ্রমে-ঘামে দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে। কৃষকের জীবনে প্রতি মুহূর্তে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকলেও তারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে দিন রাত পরিশ্রম করে। একটি প্রতিষ্ঠান কিংবা গোষ্ঠীর মুনাফার শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাপ-দাদার ভিটেমাটি ছাড়া হতে পারে না। কৃষি জমি বিধ্বংসী মুনাফা লোভীদের প্রকল্প কোন ক্রমেই কাম্য নয়।  অত্র ইউনিয়নের মানুষ স্থানীয় প্রশাসনের নিকট বসুন্ধরা গ্রুপের অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানালেও তারা তা কর্ণপাত না করে দ্রুততার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফলে এলাকাবাসী  ভিটে-মাটি ও আবাদী জমি রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট  কার্যকর পদক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে কৃষি জমি ধ্বংসকারী “বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড” নামক প্রকল্প বাতিল,বসুন্ধরা গ্রুপকে অত্র এলাকার কোন খাসজমি দীর্ঘমেয়াদী কিংবা স্বল্পমেয়াদী বন্দোবস্ত না দেওয়া, স্থানীয় অধিবাসীদের নিকট থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ কর্তৃক নামমাত্র মূল্যে ক্রয়কৃত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিসহ ৭ দফা দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দাবি আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন ভুক্তভোগীরা। 

মন্তব্য করুন


Link copied