আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ৯ অক্টোবর ২০২৫ ● ২৪ আশ্বিন ১৪৩২
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ৯ অক্টোবর ২০২৫
একদিনের ব্যবধানে ৬৯০৬ টাকা বেড়ে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস

একদিনের ব্যবধানে ৬৯০৬ টাকা বেড়ে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস

ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম তৈরিতে লাইভ টিভি ও নেক্সট টিভিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা

ফ্যাসিবাদমুক্ত গণমাধ্যম তৈরিতে লাইভ টিভি ও নেক্সট টিভিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে: তথ্য উপদেষ্টা

বিএনপি নেতা আনিসুরের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক

বিএনপি নেতা আনিসুরের মৃত্যুতে তারেক রহমানের শোক

রোববার ইতালি যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

রোববার ইতালি যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

ব্যবসাবাণিজ্যে হতাশা বাড়ছেই

রড সিমেন্টের দামে ধস, মাথায় হাত ব্যবসায়ীদের

শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, বিকাল ০৭:২৫

Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  দেশের নির্মাণসামগ্রীর বাজারে জুনের শেষ ভাগে রীতিমতো মূল্যপতন লক্ষ্য করা গেছে। রড ও সিমেন্ট এই দুই প্রধান নির্মাণ উপকরণের দামে মারাত্মক পতন ঘটেছে- যা গত কয়েক মাসের তুলনায় বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চাপে। বিশেষ করে রডের ক্ষেত্রে দাম কমার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে।

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, এই দাম কমার ধারা কতটা স্থায়ী হবে, তা নির্ভর করছে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও সরকারিভাবে নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ওপর। যদি পরিস্থিতির উন্নতি না ঘটে, তবে উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম পড়ে গেলে শিল্প খাতেই সংকট তৈরি হতে পারে। জানা গেছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত এক বছর দেশে সরকারি বড় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন কম থাকায় রড-সিমেন্টের বাজারে মন্দা ভাব দেখা দিয়েছে। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার বেছে বেছে সরকারি প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে।

বাজার বিশ্লেষকদের তথ্যমতে, দেশের খুচরা বাজারে জুনের প্রথম সপ্তাহে যেখানে প্রতি মেট্রিক টন ৬০ গ্রেডের রডের দাম ছিল ৯০ হাজার থেকে ৯২ হাজার টাকা, তা এখন নেমে এসেছে ৮২ হাজার থেকে ৮৯ হাজার টাকায়। ফলে টনপ্রতি রডের দাম কমেছে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। গতকাল রাজধানীর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশে তিন ধরনের স্টিল পাওয়া যায়, লো কার্বন স্টিল, মিডিয়াম কার্বন স্টিল ও হাই কার্বন স্টিল। কিন্তু বাড়ি নির্মাণে ৮, ১০, ১২ ও ১৬ মিলিমিটার রড ব্যবহার হয়। এ ছাড়াও বহুতল ভবন নির্মাণে ২৫, ৩২ ও ৪০ মিলিমিটার রড ব্যবহার হয়।

সিএসআরএম রড প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা, রহিম স্টিলের প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার টাকা, বায়োজিদ স্টিলের টন ৮৫ হাজার টাকা, কেএসএমএল স্টিল প্রতি টন ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা, এসসিআরএম প্রতি টনের দাম ৮৩ হাজার টাকা, বিএসএল স্টিল প্রতি টন ৮৩ হাজার টাকা, কেএসআরএম প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা, আরএসআরএম প্রতি টনের দাম ৮৫ হাজার টাকা, এইচআরএম স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার টাকা, ঢাকা স্টিল প্রতি টনের দাম ৮২ হাজার ৫০০ টাকা, সময় স্টিল প্রতি টন ৮৩ হাজার টাকা, জিপিএইচ ইস্পাত প্রতি টনের দাম ৮৬ হাজার টাকা, জেডএসআর স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার টাকা, এইচকেজি স্টিল প্রতি টন ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা, পিএইচপি স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার টাকা, মেট্রো স্টিল প্রতি টনের দাম ৮২ হাজার টাকা, আনোয়ার স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৪ হাজার টাকা, আকিজ ইস্পাত প্রতি টনের দাম ৮৫ হাজার টাকা, বিএসবিআরএম স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৫ হাজার টাকা, প্রাইম স্টিল প্রতি টন ৮২ হাজার ৫০০ টাকা, আবুল খায়ের স্টিল প্রতি টন ৮৮ হাজার টাকা ও বিএসআরএম স্টিল প্রতি টনের দাম ৮৯ হাজার টাকা।

সিমেন্টের দামও কমেছে বস্তাপ্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা : রডের পাশাপাশি সিমেন্টের দামেও বড় রকমের হ্রাস দেখা গেছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বাজারে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর সিমেন্টের দাম বস্তাপ্রতি ৫০০ থেকে ৫৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত মাসে ছিল ৫২০ থেকে ৫৮০ টাকা পর্যন্ত। এতে বস্তাপ্রতি গড়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দাম কমেছে। বর্তমানে বসুন্ধরা সিমেন্ট ৫৪০ টাকা, সেভেন রিংস সিমেন্টের প্রতি ব্যাগের দাম ৫৩৫ টাকা, বীর সিমেন্টের দাম ৫৩০ টাকা, ইঞ্চি সিমেন্টের দাম ৫২৫ টাকা, ক্রাউন্ট সিমেন্ট ৫৩৫ টাকা, শাহ সিমেন্ট ৫৪০ টাকা, আকিজ সিমেন্ট ৫৪০ টাকা, প্রিমিয়ার সিমেন্ট ৫২০ টাকা, রুবি সিমেন্ট ৫২৫ টাকা, ডিলাক্স সিমেন্ট ৫১০ টাকা, সুপ্রিম সিমেন্ট ৫১৫ টাকা, সেভেন হর্স সিমেন্ট ৫১৫ টাকা, অলিম্পিক সিমেন্ট ৫২০ টাকা, ফ্রেশ সিমেন্ট ৫১৫ টাকা, আমান সিমেন্ট ৫২৫ টাকা, আলট্রাটেক ৫৬০ টাকা, স্ক্যান সিমেন্ট ৫৬০ টাকা।

রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে বিক্রি কমে যাওয়ায় মজুত থাকা পণ্যের দাম কমাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

মোহাম্মদপুরের এক রড-সিমেন্ট বিক্রেতা বলেন, ‘গত তিন সপ্তাহে বিক্রি অনেক কমে গেছে। মজুত ঝুঁকির মধ্যে পড়ায় আমরা দাম কমাতে বাধ্য হয়েছি।’ নির্মাণসামগ্রীর বাজারে এই মূল্যপতন সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির হলেও উৎপাদন খাতে তা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের নজরদারি ও সুষম বাজার নীতি এখন আরও বেশি প্রয়োজন। 

মন্তব্য করুন


Link copied