নিউজ ডেস্ক: শেখ হাসিনা ভারতে বসে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নাশকতা করার নির্দেশ দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা এখনো শয়তানি ছাড়েননি। ভারতে তিনি শয়তানির আস্তানা বানিয়ে বসেছেন। ভারতে বসে আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীদের নাশকতা করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টর ২ নম্বর ব্রিজ এলাকায় আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে খাল ও লেক পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শেখ হাসিনা আগেও গুম-খুন করেছেন, রাতে ভোট করেছেন। তাঁর বাবা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত হত্যা-লুটপাট চালিয়েছেন। বাকশাল গঠন করে সব দল নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আর শহীদ জিয়া দেশবাসীকে মুক্তি দিয়েছিলেন। বহুদলীয় রাজনীতি করার ব্যবস্থা করেছেন। তিনি কৃষিতে বিপ্লব এনেছেন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে উদ্ধৃত কৃষিপণ্য ১৯৭৬-৭৭ সালে চালসহ অনেক আইটেম রপ্তানি করেছেন। কলকারখানা স্থাপন ও বন্ধ কারখানা চালু করেছেন। খাল খনন করেছেন। শহীদ জিয়া যা করেছেন, আমাদের তা করতে হবে। এ দেশে গার্মেন্টস এনেছেন জিয়াউর রহমান। শ্রমিকেরা কাজ করলে ডলার আসে। রেমিট্যান্স পাঠায় আর তাঁদের রেমিট্যান্সে আমরা ফুটানি করি।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় সমঝোতার দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের মতন ডাকাত সরকার হলে হবে না। শেখ হাসিনা সরকার ২০ হাজার নেতা-কর্মী হত্যা করেছে। ২ হাজার ৫০০ নেতা-কর্মী গুম করেছে।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যঙ্গ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেকে স্যুট পরে আসছেন। স্যুট পরে খাল পরিষ্কার হয় না। অনেক মহিলা নেতা আসছেন পার্লার থেকে। তাহলে কীভাবে খালে নামবেন? কর্মসূচি দিয়ে নিজেদের কাজ করতে হবে। আগামী কয়েক দিন খাল পরিষ্কারের কর্মসূচি চলবে। আপনাদের লোকজনের কাছে যেতে হবে। জনগণের কাছে যেতে হবে। আমাদের কাজ হলো, মানুষের মন জয় করা।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের ওপর হামলায় আওয়ামী লীগ জড়িত দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভিপি নুরের ওপর অতর্কিত হামলা তাদেরই (আওয়ামী লীগ) কাজ। আপনাদের ওপর আঘাত আসলে সেই হাত ভেঙে দিবেন। মনে রাখবেন, ২ হাজার মানুষের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। বর্তমান সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন দিবে, এমনটা জনগণ আশা করে।’
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী দিনে দুটি সংসদ হবে। দেশের সিনিয়র বরেণ্য লোকজন দিয়ে উচ্চকক্ষ সংসদ হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দেওয়া হবে।
সাংবাদিকতা প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আগে সাংবাদিকেরা সত্য বলতে পারত না, লিখতে পারত না। এখন কিছুটা পারে। আমরা সরকার গঠন করলে সাংবাদিকেরা স্বাধীনভাবে লিখতে পারবে।’
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হকের সভাপতিত্বে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব মো. মোস্তফা জামান।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।