স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী জেলায় বছরের প্রথম দিনে নতুন বই বিতরণ শুরু হয়েছে। বুধবার(১ জানুয়ারী) সকালে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই বই বিতরণ করা হয়। তবে সরবরাহের অপর্যাপ্ততায় সকল শ্রেণি ও সকল বিষয়ের বই বিতরণ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
প্রাথমিক স্তরে বুধবার সকালে জেলা শহরের শাহিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জানকিনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং নতুনবাজার সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বই বিতরণ করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রাথমিক স্তরে এবার জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলায় নতুন বই সরবরাহ পাওয়া গেলেও সদর উপজেলায় ১জানুয়ারী পর্যন্ত কোন বই সরবরাহ পাওয়া যায়নি। এজন্য পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ৫০০ সেট বই এনে ওই চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ করা হয়।
এবিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউল গণি ওসমানী আগামী সপ্তাহের মধ্যে বই সরবরাহ পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে বুধবার জেলার সৈয়দপুর উপজেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক স্তরের বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় সকাল ১০টায়। শহরের নয়াবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিতরণ অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুর-আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি মো. আব্দুল গফুর সরকার, বিশেষ অতিথি উপজেলা জামায়াতের আমীর হাফেজ মাওলানা মো. আব্দুল মুনতাকিম, নয়াবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মির্জা জহুরা আক্তার। সেখানে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।
মাধ্যমিক স্তরে আংশিক বই বিতরণ করা হয়েছে জেলা সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর উপজেলায়। সরবরাহ না পাওয়ায় কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় বই হয়নি। এছাড়া মাধ্যমিক স্তরের দাখিল, ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল, কারিগরি, ইংরেজী মাধ্যম এবং এফতেদায়ীর কোন বই এপর্যন্ত সরবরাহ পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি জানান, জেলায় চাহিদা রয়েছে ১৮ লাখ ১১ হাজার ৮১৫টি বইয়ের। সেখানে এপর্যন্ত পাওয়া গেছে সাত লাখ ৪৯ হাজার ৯৭৫টি। যার শতকরা হার ৪১ দশমিক ৩৯ ভাগ।
অপরদিকে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান জানান, জেলায় মাধ্যমিক ও এফতেদায়ী পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৪৮ লাখ ১১ হাজার ১৮৩টি। এরমধ্যে মাধ্যমিক সাধারণ ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৩৩, দখিল ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০, ভোকেশনাল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৮০, দাখিল ভোকেশনাল, ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬১০, কারিগড়ি ২৬ হাজার ৮২০, ইংরেজী মাধ্যম ৫ হাজার ৭৫০, এফতেদায়ী ৪ লাখ ৮১ হাজার ৪০০ টি। উক্ত চাহিদার বিপরীতে জেলার ছয় উপজেলার মধ্যে ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, সৈয়দপুর এবং জেলা সদরে শুধুমাত্র মাধ্যমিক সাধারণের ১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ বই সরবরাহ পাওয়া গেছে। কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় কোন বই সরবরাহ পাওয়া যায়নি। এছাড়া দাখিল, ভোকেশনাল, দাখিল ভোকেশনাল, কারিগরি, ইংরেজী মাধ্যম এবং এফতেদায়ীর কোন বই সরবরাহ পাওয়া যায়নি। সরবরাহ পাওয়া বইয়ের শতকরা হার ২ দশমিক ৩৪ ভাগ। সরবরাহকৃত বই শুধুমাত্র বাংলা, ইংবেজী এবং গণিত বিষয়ের। যে পরিমান বই পাওয়া গেছে তা বিদ্যালয় পর্যায়ে বিতরণ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।