স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ হিমালয় ও পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করা শকুন নানা সময়েই খাদ্যের সন্ধানে উড়ে আসে সমতল এলাকাগুলোতে। আবর্জনা ও মৃত প্রাণী খেয়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীকুল শকুন বা চিল। এর জন্য শকুনকে বলা হয় প্রকৃতির ঝাড়ুদার। তবে শতশত কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার ফলে অনেক শকুনই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেসবকে উদ্ধার করে দেশের একমাত্র শকুন চিকিৎসা ও পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে সুস্থ করার পর আবারও উড়িয়ে দেওয়া হয় আকাশে।
নীলফামারীতে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া এমনই ১টি শকুনকে সোমবার(৫ ফেব্রুয়ারি) সুস্থ করে চিকিৎসা শেষে মুক্ত করে আকাশে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারি কমিশনার ভূমি ইবনুল আবেদিন এর উপস্থিতিতে এই পাখি অবমুক্ত করা হয়।
এ সময় সামাজিক বন বিভাগ নীলফামারীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, গত শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যয় জেলা সদরের ইটাখোলা ইউনিয়নের বুড়িরডাঙ্গা খালে অসুস্থ অবস্থায় বিরলপ্রজাতির একটি শকুনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। পাখিকে দুইদিন চিকিৎসা সেবা ও পর্যাপ্ত খাদ্য খাওয়ানো হয়। পুর্ণ সুস্থ্য হওয়া সোমবার অবমুক্ত করা হয়। এসময় তার গায়ে একটি স্যাটেলাইট ট্রাকার লাগানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, শকুন বিলুপ্তপ্রায় একটি প্রাণী। বর্তমানে বাংলাদেশে শকুনের দেখা একেবারেই মেলে না। সাধারণত শকুন ভারতের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করে। সেখানে খাদ্যের অভাব দেখা দিলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে চলে আসে। তাদের মধ্যে যেসব শকুন অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের উদ্ধার করে সিংড়া জাতীয় উদ্যান বা শালবনে শকুন চিকিৎসা ও পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শকুন মূলত শীত মৌসুমেই বেশি আসে। দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় নামে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব শকুনের পরিণতি হয় মৃত্যু। যেগুলো আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তাদের নেয়া হয় সিংড়া ফরেস্টে। সিংড়া ফরেস্টে শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপনের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। এখান থেকে প্রতিবছর উদ্ধার করা ২০ থেকে ২৫টি শকুনকে সুস্থ করার পর অবমুক্ত করা হয়।