আর্কাইভ  সোমবার ● ২৪ নভেম্বর ২০২৫ ● ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ২৪ নভেম্বর ২০২৫
হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রায় ২৭ নভেম্বর

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি
হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রায় ২৭ নভেম্বর

হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের মামলার যুক্তিতর্ক ২৫ নভেম্বর

হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের মামলার যুক্তিতর্ক ২৫ নভেম্বর

রাজনীতি ছেড়ে 'পাপমুক্ত' হতে দুধ দিয়ে গোসল!

রাজনীতি ছেড়ে 'পাপমুক্ত' হতে দুধ দিয়ে গোসল!

সৈয়দপুরে ইউপি মহিলা সদস্যের বাড়ি থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার॥স্বামী পলাতক

বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৩, রাত ০১:২৩

Advertisement

স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের এক মহিলা ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে তিন সন্তানের জননী লাভলী বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার(২৩ আগষ্ট) দুপুরে খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মহিলা ইউপি সদস্যের বাড়িতে থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায় পুলিশ। 
গৃহবধূ লাভলী বেগম ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরতি মহিলা মেম্বার রেজেকা বেগমের দেবর সবুজ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে সবুজ আলী পলাতক রয়েছে। 
এদিকে শ্বশুড় বাড়ির দাবী আত্মহত্যা কিন্তু নিহতের বড় ভাইয়ের  অভিযোগ তাকে হত্যা করা হয়েছে। 
জানা যায়, জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দুরাকুুটি ঘোষপাড়ার মোবার হোসেনের মেয়ে নিহত লাভলী বেগমের সাথে ২০ বছর আগে সৈয়দপুরের খাতামধুপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আমিন আলীর সাথে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২টি মেয়ে সন্তান হয়।
চার বছর আগে পাশের ৩ ওয়ার্ডের ডাঙাপাড়ার মৃত কালা মামুদের ছেলে দুই সন্তানের জনক সবুজ আলী কৌশলে পরকীয়া স¤পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্যায়ে দুইজন পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। দীর্ঘ দিন ঢাকায় অবস্থান করে গার্মেন্টসে চাকরী করছিল। তাদের সংসারে দেড় বছর বয়সী একটি ছেলে আছে। প্রায় ৭ মাস আগে সবুজের বাবা মারা গেলে স্বামী-স্ত্রী গ্রামের বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করে। এরপর থেকে সবুজের প্রথম স্ত্রী হেলালী বেগমের সাথে লাভলী বেগমের প্রায় সময় ঝগড়া ও মারপিট হতো। সম্প্রতি এই অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়ে পরিবারের সকলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে লাভলীর উপর। 
লাভলীর বড়জা মহিলা সদস্য রেজেকা বেগম বলেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। সতিনের ঘরে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। তবে তা টুকটাক কথা কাটাকাটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কখনই তা বেধড়ক মারপিট পর্যায়ে নয়। তাই নির্যাতনের কারণে মৃত্যুর প্রশ্নই উঠেনা। তিনি বলেন, ঘটনার দিন বিকাল থেকেই লাভলী বাচ্চাসহ তার ঘরে অবস্থান করছিল। রাতে বাচ্চারা খুব কান্না করছিল। সকালে বাড়ির লোকজন ঘরের জানালা দিয়ে দেখে ঘরের চালের সাথে তার মরদেহ ঝুলছে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। 
রেজেকা বেগমের স্বামী সোহাগ আলী বলেন, ছোটভাই সবুজ ওই মহিলাকে বিয়ে করে ঢাকায় যাওয়ার পর তার প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আমিই ভরণ পোষণ দিয়েছি। দীর্ঘদিন পর বাড়িতে আসলে সবুজের দ্বিতীয় স্ত্রী এখানে থাকতে চাচ্ছিল না। এতে সম্মত না হওয়ায় লাভলী তার স্বামী ও সতিনের সাথে অহেতুক ঝগড়া করত। 
এদিকে লাভলীর ভাই আব্দুল জলিল অভিযোগ করে বলেন, সবুজ একজন বখাটে। নিজের স্ত্রী থাকতেও লম্পটের মত অপকৌশলে আমার বোনের সুন্দর সংসার ভেঙ্গে তাকে বেকায়দায় ফেলে তার পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। আগের মেয়ে দুইটাকে মায়ের স্নেহে থেকে বঞ্চিত করেছে। এখন আবার বাড়িতে নিয়ে এসে বড় বউকে দিয়ে উত্যক্ত করাসহ বেদম অত্যাচার শুরু করে। 
নিহত গৃহবধূর খালু মিজানুর রহমান বলেন, সবুজের পরিবারের সবাই নির্যাতন করে মেরে ফেলে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে। কারণ লাভলীর দুই হাত মুঠো করা আছে। তাছাড়া ফাঁস দেয়ার কথা বললেও গলায় কোন দাগ নাই। জিহ্বা বের হয়নি বা চোখও বড় হয়নি। অর্থাৎ আত্মহত্যার কোন লণই পাওয়া যায়নি। বরং পিঠে কামড়ের এবং বুকে খামচি দেয়ার চিহ্ন আছে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মফিজুল হক বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। রির্পোট পাওয়ার পর ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে। তিনি বলেন, ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। এ ব্যাপারে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

মন্তব্য করুন


Link copied