আর্কাইভ  রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫ ● ৯ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ২৪ আগস্ট ২০২৫
জয়ের জটিল সমীকরণ

জয়ের জটিল সমীকরণ

হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধ
সীমাহীন বর্বরতা
হাসিনার মামলায় ১৬ চানখাঁরপুল মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্য শেষ

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

ছুটিতে পাঠানো সেই ১২ বিচারপতি কোথায়?

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

হাসিনার পলায়ন উদযাপনের জনস্রোতে কেন এত গুলি, কেন এতো আক্রোশ

রবিবার, ২৪ আগস্ট ২০২৫, রাত ১২:৪৬

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক: ‘শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়েছেন’— ৫ আগস্ট দুপুরে এ খবর খবর ছড়িয়ে পড়তেই রাজপথে নামে জনতার ঢল। মুহূর্তেই রাজধানী ছাড়িয়ে মফস্বল শহর এমনকি গ্রাম-গঞ্জেও স্বৈরাচার পতনের বিজয়োৎসব শুরু হয়।

‘পলাইছে রে পলাইছে শেখ হাসিনা পলাইছে’—স্লোগানে স্লোগানে যখন রাজপথ মুখর হতে থাকে, মুক্তিকামী মানুষ আর ঘরে বসে থাকতে পারেনি। আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সবাই ফ্যাসিবাদের পতনের বিজয় মিছিলে শামিল হয়। কিন্তু এই বিজয় মিছিলেও গুলি চালায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত সদস্যরা। ঝরে যায় অসংখ্য প্রাণ। অনেকে হন গুরুতর আহত, অনেককে বরণ করতে হয় অন্ধত্ব কিংবা পঙ্গুত্ব।

সেদিন হাসিনার পলায়নের মধ্য দিয়ে যখন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিশ্চিত হয়ে যায়, যখন তাদের মন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে নেতা-কর্মীদের বেশিরভাগ বিদেশে পালানোর পথ ধরেন, তখন কোন স্বার্থে বা কোন আক্রোশে পুলিশ নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজো।

রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের ধারণা, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী আমলে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যেসব নিয়োগ হয়েছিল, তার শীর্ষ পর্যায়ের প্রায় সবই ছাত্রলীগ ক্যাডার বা আওয়ামী পরিবারের সন্তান। এদের অনেকে আক্রোশ থেকেও জনতার ওপর পৈশাচিক কায়দায় গুলিয়ে চালিয়ে থাকতে পারে।

আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাদের মতে, মাঠ পর্যায়ের পুলিশের ওপর বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের যে নির্দেশ আগের রাতে বা সকালে দেওয়া ছিল, সেটা হাসিনা পালানোর পরও বদলায়নি হাইকমান্ড। ফলে তাদের অনুগত পুলিশের ইউনিটগুলো ফ্যাসিবাদের পতনের পরও ছিল বেপরোয়া।

হাসিনার অনুগত শীর্ষ কর্তারা জনরোষ থেকে বাঁচতে সুযোগ বুঝে সটকে পড়েন। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে মধ্য ও নিম্নসারির কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা আগের নির্দেশনা অনুসারেই জনতার বিক্ষোভ দমনে বলপ্রয়োগ করেন, এতে যেমন অনেক ছাত্র-জনতার প্রাণ ঝরে। কতিপয় পুলিশ সদস্যকেও ক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়তে হয়। অনেক থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে সেসময় ক্ষোভের আগুন জ্বলে। হয় ভাঙচুরও।

হাসিনার পতনের খবর ছড়ানোর পরও যাত্রাবাড়ীতে ৫২ জনকে হত্যা করে পুলিশ
হাসিনার পতনের খবর ছড়ানোর পর যখন দেশজুড়ে ছাত্র-জনতা বিজয়োল্লাসে মেতে উঠছিল, তখন ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতা হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। বিবিসির অনুসন্ধান অনুসারে, সেখানে সেদিন খই ফোটানোর মতো গুলি চালিয়ে ৫২ জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করে পুলিশ।

বিবিসির অনুসন্ধান বলেছে, সেদিন ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে দুপুর দুইটা ৪৩ মিনিটে। অথচ তার প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে থেকেই টেলিভিশনগুলোতে স্ক্রল যাচ্ছিল—জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান। তার আগেই ছড়ায়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।

অনুসন্ধানে বিবিসি দেখেছে যে, ৫ আগস্ট বিকেলে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। সেদিন যাত্রাবাড়ীতে কমপক্ষে ৫২ জন সাধারণ মানুষ নিহত হন। ড্রোন ভিডিওতে মহাসড়কের ওপর হতাহতদের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। তখন পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ শাহবাগের দিকে চলে যান। আর যারা তখনো যাত্রাবাড়ীতে ছিলেন, তাদের মধ্যে বিক্ষুব্ধ একটি অংশ থানায় আগুন দেন। এ ঘটনায় পুলিশের কমপক্ষে ছয়জন সদস্য নিহত হন।

যাত্রাবাড়ীর মুরাদপুর এলাকায় সেদিন গুলিতে নিহত হন ৪৪ বছর বয়সী মো. আক্কাস আলী। আক্কাস ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার মৃত্যু গোটা পরিবারের ওপর ফেলেছে মারাত্মক প্রভাব।

তার ছেলে আব্দুর রব বলেন, ৫ আগস্ট বিকেলে বাবা মিছিলে যোগ দিতে বের হন, কিন্তু আর ফেরেননি। গুলিতে শহীদ হন তিনি।

আক্কাসের পরিবার এখনো মানসিক ও আর্থিক সংকটে ভুগছে। সরকার ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আংশিক সহায়তা পেয়েছে পরিবারটি। কিন্তু হত্যার বিচারের অপেক্ষায় তারা।

মিরপুরের ভাসানটেকের বিজয় মিছিলে গুলি
হাসিনার পলায়নের খবরে সেদিন মিরপুরের ভাসানটেকে জনতা বিজয় মিছিল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হন ৩১ বছর বয়সী মো. ফজলু। তখন তাকে ঘটনাস্থলের কাছে মার্কস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় তার পরিবার ১৬৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেছে, যার মধ্যে আসামি হিসেবে রয়েছেন পতিত সরকারের প্রধান শেখ হাসিনাসহ তার অনুগত পুলিশ কর্মকর্তা ও নেতারা।

ফরিদপুরে বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলি
ফ্যাসিবাদের পতনের খবরে সারা দেশের মতো ফরিদপুরেও বিজয় মিছিল নিয়ে শহরে জড়ো হতে থাকে জনতা। এক পর্যায়ে শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় এবং জনতার মোড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। হঠাৎ কতিপয় পুলিশ সদস্য বিজয় মিছিলকে উদ্দেশ্য করে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট, ককটেল ও গুলি ছুড়তে থাকে। এতে অনেকেই আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন পূর্ব খাবাসপুরের শামসু মোল্লা। পুলিশের তাণ্ডবে মিছিলটি ছত্র ভঙ্গ হয়ে যায়। পরে বিক্ষুব্ধ কিছু জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়।

বগুড়ায় বিজয় মিছিলে পুলিশের গুলি কেড়ে নেয় স্কুলছাত্রের প্রাণ
বগুড়ার ১৫ বছর বয়সী জুনাইদ ইসলাম রাতুল স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতনের খবরে বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। যোগ দিয়েছিল বিজয় মিছিলে। কিন্তু অতি উৎসাহী পুলিশ সদস্যরা নির্বিচারে ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয় সে। ৪৯ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করার পর ঢাকার হাসপাতালে মারা যায় রাতুল। তার মাথা থেকে ৩৬টি গুলি বের করার খবর প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।

টাঙ্গাইলে বিজয় মিছিলে গিয়ে শহীদ হয় মারুফ
টাঙ্গাইলেও সেদিন বিজয় মিছিল বের হলে এতে যোগ দেয় দশম শ্রেণির ছাত্র মারুফ মিয়া। কিন্তু মিছিলের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে শহীদ হয় মারুফ। ওই ঘটনায় মারুফের মা মারুফা বেগম মামলা দায়ের করেছেন ৫৬ জনের বিরুদ্ধে।

এছাড়া চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায়ও হাসিনার পতনের খবর ছড়ানো সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় ইউনিটের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চোখে পড়ে।

কেন পুলিশ এত বেপরোয়া ছিল
ফ্যাসিবাদী সরকার রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণে ৪ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহিংসতা-হত্যাকাণ্ডের পেছনে ‘সরকার টেকানো’ কারণ হিসেবে দেখা হলেও ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর পরও কেন গুলি চলেছে, সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফিরছে সবাই। এমনকি অভ্যুত্থানের পরপর খোদ পুলিশের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বক্তব্যেই এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দেখা যায়।

ওই সময় কয়েকদিন পুলিশ সদস্যরা আন্দোলন করেছিলেন। সেসময় বিভিন্ন দাবি দাওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে পুলিশকে রাজনৈতিকীকরণ থেকে মুক্ত রাখার দাবি জানান তারা। জুনিয়র ওই কর্মকর্তারা বলেন, সরকারের পদত্যাগের পর আমরা দেখেছি আমাদের অভিভাবকরা (শীর্ষ কর্মকর্তারা) কোনো ধরনের নির্দেশনা ছাড়াই আত্মগোপনে চলে যান, যা আমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দেয়।

তারা তখন বলেন, সরকারের পতন হচ্ছে, তা আগের দিনই টের পেয়েছিলেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তখন ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা নিরাপদ স্থানে চলে যান। অথচ সরকার পতনের দিনও ছাত্র-জনতাকে দমন করতে সাধারণ পুলিশ সদস্যদের মাঠে নামানো হয়। এর ফলে থানায় ঢুকে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের হতাহতের জন্যও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দায় রয়েছে। এজন্য তারা ‘দায়িত্বহীন’ পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার চান।

‘জনগণের জয় মেনে নিতে পারেনি পরাজিত শক্তি’
৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পরও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও অপরাধ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিগত সরকারের পতন ও সরকারপ্রধানের দেশত্যাগ তারা (আওয়ামী লীগ) মেনে নিতে পারেনি। জনগণের বিজয় তারা স্বীকারও করতে চায়নি।

তিনি বলেন, “বিগত সরকার বছরের পর বছর মানুষের অধিকার হরণ করেছে, নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। সরকারের সমালোচনা করলে হামলা-মামলা দিয়ে দ্বিমত দমন করেছে। গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা ঘটেছে— এসব অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এসব ঘটনার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই বিগত সরকার পতনের আন্দোলন সাধারণ ছাত্র-জনতা তাদের বাঁচার পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল। এই আন্দোলনে সরকার নানাভাবে পরাজিত হয়েছিল।

ড. তৌহিদুল হক আরও বলেন, আমাদের দেশে যখন কোনো রাজনৈতিক দল দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা পুলিশকে আজ্ঞাবহ বাহিনীতে পরিণত করে। আওয়ামী লীগও ১৫ বছর ক্ষমতায় থেকে সেটিই করেছে। সে কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন থেকে নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তারা যে ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন, তার পরিণতিতে ভবিষ্যতে তাদের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। এমনকি কেউ কেউ গোপনে প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছিল।

তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঢাকার বাইরে অনেক এলাকায় নির্দেশনা পৌঁছানো ছিল চ্যালেঞ্জিং। যে কর্মকর্তা পুরোনো নির্দেশনায় (বিক্ষোভ দমনে সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ) কাজ করেছেন, তাদের ভূমিকা ছিল ভিন্ন; আবার যারা নতুন নির্দেশনা পেয়েছিলেন, তারা অন্যভাবে আচরণ করেছেন। তবে যে নির্দেশই থাকুক না কেন, ছাত্র-জনতা বা সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানোর কোনো সুযোগ নেই।

আমরা অতীতের নানা শাসনব্যবস্থা থেকে গণতন্ত্রে ফিরেছি— এটা জনগণের সরকার, জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়ার কথা। সেই জনগণকে যদি তার মতামত জানাতে গিয়ে আহত হতে হয়, নিহত হতে হয়, তাহলে গণতন্ত্রের কোনো তাৎপর্য থাকে না। যার আমলে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে, তার ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই, বলেন অপরাধ বিশেষজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, জনগণ তাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিল। তারা আন্দোলনে জিতে ঘরে ফিরেছে। কিন্তু যারা পরাজিত হয়েছে, তাদের আজ্ঞাবহ শক্তিগুলো ও নীতি-আদর্শহীন রাজনীতির সাথে যুক্ত ব্যক্তিরাই মানুষের আন্দোলন ও বিজয় মেনে নিতে পারেনি। তাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তারা সাধারণ মানুষের ওপর হামলা, হুমকি, হত্যা ও গুলি বর্ষণ করে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।

অতীতের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাস থেকে রাজনৈতিক দলগুলো কিছুই শেখেনি। তাই নির্দিষ্ট সময় পর সাধারণ মানুষকেই জীবন ও রক্তের বিনিময়ে খেসারত দিতে হচ্ছে।

১৯৯০ সালের অভ্যুত্থানের সময় বিজয় মিছিলে গুলি ছোড়া হয়েছিল কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ড. তৌহিদুল হক বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম অভ্যুত্থান ছিল ১৯৯০ সালে এরশাদবিরোধী আন্দোলন। দ্বিতীয় অভ্যুত্থান ঘটেছে ২০২৪ সালে। ১৯৯০ সালের বিজয় মিছিলে ঢাকায় কিছু এলাকায় গুলি চালানো হয়েছিল। তবে নিহতের সংখ্যা খুব বেশি নয়। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক থাকলেও আহতের সংখ্যা ছিল উল্লেখযোগ্য।

সংস্কার ও বিচার দাবি
জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বরাবরই অভ্যুত্থানকালের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করে আসছেন। এরই মধ্যে শেখ হাসিনা, তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু মামলা হয়েছে। শুরু হয়েছে বিচার কার্যক্রমও।

একইসঙ্গে পুলিশ বাহিনীতে আমূল সংস্কারেরও দাবি উঠেছে অভ্যুত্থানের সময় থেকেই। অবশ্য সরকার এজন্য একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে। সেই সংস্কার কার্যক্রমের ফলাফল এখনো দৃশ্যমান হয়নি।

সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ এক অনুষ্ঠানে বলেন, পুলিশ-মিলিটারি সরাসরি গুলি করে দেড় হাজার ছাত্র জনতাকে হত্যা করেছে। এই পুলিশ বাহিনীর অধিকাংশ সদস্যকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া দরকার ছিল। আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়াদের মধ্য থেকে রিক্রুট করে পুলিশ বাহিনী রিফর্ম করা দরকার ছিল।

মন্তব্য করুন


Link copied