নিউজ ডেস্ক: গ্রীষ্মের রক্তলাল রঙা কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি বর্ণের জারুল এবং সোনালি-হলুদে জড়ানো সোনালুর পাশাপাশি রংপুর মহানগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং নিসবেতগঞ্জ ঘাঘট নদ সংলগ্ন প্রয়াস সেনা বিনোদন কেন্দ্রে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সুগন্ধি লালসোনাইল ফুল। ফুলবিহীন গাছটিকে দেখলে বড়সড় সবুজ ছাতার মতো মনে হবে। তবে ডালপালা কাটলে গাছের এমন সৌন্দর্য আর থাকে না। গাছটির দেশি নাম লালসোনাইল। আবার ক্যাশিয়া জাভানিকা নামেও পরিচিত।
লালসোনাইল সম্পর্কে জানাগেছে, শীতের শেষে গাছের সব পাতা ঝরে পড়ার পর গ্রীষ্মের প্রথম ভাগেই পাতা ও ফুল প্রায় একই সময়ে আসে। রং হালকা গোলাপি, সুগন্ধি আছে। রংটা কৃষ্ণচূড়ার মতো অতটা উগ্র নয় বলে আরও মন ভোলানো। এ ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম Cassia javanica পরিবার। লালসোনাইলের ফুল, পাতা ও গাছের গড়ন বেশ নান্দনিক।
সৌন্দর্যের পাশাপাশি আছে নানান ভেষজ উপকারিতা। কোষ্ঠকাঠিন্য, কোলিক, ক্লোরোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হতো প্রাচীনকাল থেকেই। গাছটির পাতা হারপিস সিমপ্লেক্সের (হারপিস সিমপ্লেক্স হলো একধরনের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ভাইরাল সংক্রমণ) বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে এবং এর ছাল বা বাকল আয়ুর্বেদিক ও অন্যান্য ঐতিহ্যগত ওষুধের অ্যান্টিডায়াবেটিক ফরমুলেশনের অন্যতম উপাদান। ট্যানারি শিল্পেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে লালসোনাইলের ছাল।
বাংলা একাডেমির সহপরিচালক এবং বেগম রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবিদ করিম মুন্না জানান, লালসোনাইল বাংলা নামটি রাখেন প্রকৃতির বরপুত্র প্রয়াত অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা। মে মাসে পূর্ণ প্রস্ফুটনকাল তাই অনেকে ভুল করে মে ফ্লাওয়ার বলেও চেনেন। বাসি ও তাজা ফুল মিলে চমৎকার বর্ণবৈচিত্র্য তৈরি করে। ফল হয়ে থাকে গোলাকার, লম্বা, গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। বীজের মাধ্যমেই এর বংশবিস্তার ঘটে।