আর্কাইভ  শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪ ● ১২ শ্রাবণ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২৭ জুলাই ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: রংপুরে ১২ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭৫       আহতরা যেই দলেরই হোক, চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী       ২৭শে জুলাই রংপুর বিভাগের আট জেলায় কারফিউ শিথিল       সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান বেরোবি প্রশাসনের       "শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে"      

 width=
 

এক যুগ পর প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন; চালু হচ্ছে বুড়িমারী এক্সপ্রেস

সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪, রাত ১০:১৭

লালমনিরহাট প্রতিনিধি।। দীর্ঘ প্রতিক্ষার প্রায় এক যুগ পর মৃ্গলবার থেকে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে লালমনিরহাট জেলার মানুষের কাঙ্খিত ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি। তবে বুড়িমারী থেকে সরাসরি লালমনিরহাট-ঢাকা পর্যন্ত না হয়ে একটি শাটল ট্রেন দিয়ে চালু হচ্ছে এই আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি।

সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক্স সুপারেন্টডেন্ট (ডিটিএস) আব্দুল্লাহ আল মামুন বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আদিতমারী উপজেলায় এই ট্রেনের স্টপেজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জেলার সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে জেলাজুড়ে। এরই মধ্যে সোমবার মানববন্ধনের কর্মসূচীর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুত এই আন্তঃনগর ট্রেনটি কয়েক দফা ঘোষণা দিয়েও চালু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ছিল জেলাবাসী। এ নিয়ে একাধিক রিপোর্টও প্রকাশিত হয়। তবে এবার রমজানের প্রৎম দিন থেকে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) উদ্বোধনের ঘোষণা দিয়েছেন লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগ কর্তৃপক্ষ। 

এর আগে রেল ভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালন ও উন্নয়ন বিষয়ক একাধিক কর্মশালায় বুড়মারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালুর কথা নিশ্চিত করলেও বার বার সেই তারিখ পিছিয়ে।

কাঙ্খিত এই ট্রেনটি বুড়িমারী স্থলবন্দর স্টেশন থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেনটি সরাসরি চলাচলের কথা থাকলেও তা আর হচ্ছে না। আপাতত একটি শাটল ট্রেন লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী স্টেশনে যাবে এবং একইভাবে ওই শাটল ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে লালমনিরহাট স্টেশনে এসে মূল আন্তঃনগর ট্রেন ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস' এ সংযোগ দেওয়া হবে। 

এছাড়া আন্তঃনগর ট্রেনটি জেলার পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়ে করলেও আদিতমারী উপজেলা বাদ দিয়ে অপর চারটি উপজেলায় স্টপেজ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।

মেহেদী হাসান হৃদয় নামের এক ব্যক্তি ‘লালমনিরহাট প্রতিদিন নামের একটি গ্রুপে বিদ্রুপ করে লিখেছেন, ‘বুড়িমারী-পাটগ্রাম-বড়খাতা-হাতীবান্ধা-তুষভান্ডারের ১৩ লক্ষ্যের অধীক যাত্রীরা শাটলে উঠে লালমনিরহাট গিয়ে ২টা বস্তা দুই ঘাড়ে আর একটি ব্যাগ এক হাতে অন্য হাতে মোবাইল টিপতে টিপতে শাটল থেকে নেমে ঢাকার ট্রেনে উঠবো মাশাআল্লাহ।

আদিতমারী উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুলতান হোসেন তাঁর ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস আদিতমারীর উপর দিয়েই তো যাবে। না-কি বড়খাতা হয়ে তুষভান্ডার দিয়ে মহিপুর ব্রিজ হয়ে ঢাকা যাবে? হামার উপজেলাত তো থামবে না, এলা কি হইবে হামার?

শুধু ফেসবুক নয়, ক্ষোভ জানিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচীর ঘোষণাও দিয়েছে আদিতমারী উপজেলার মানুষজন। এ ব্যাপারে আজ সোমবার আদিতমারী উপজেলা সদরের বিভিন্ন পেশার লোকজন একটি মানববন্ধন করবে মলেও জানিয়েছেন একটি সুত্র।

আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস ফারুক বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলার ওপর দিয়েই ট্রেনটি যাবে। সব উপজেলা সদরে থামলেও আদিতমারীতে থামবে না—এটা বৈষম্য এবং অদূরদর্শিতা। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের প্রতিবাদ সভায় আমিও থাকবো এবং উপজেলার আপামর জনসাধারণ উপস্থিত থাকবেন।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট ডিভিশনাল ট্রাফিক্স সুপারেন্টডেন্ট (ডিটিএস) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর ব্যাপারে বার বার মৌখিকভাবে প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু লিখিত কোনো নির্দেশ কখনই আসেনি। এবারে ট্রেনটি চালুর ব্যাপারে রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত নির্দেশ এসেছে। তবে বুড়িমারী স্টেশনে ট্রেনের র‍্যাক, বগি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার ওয়াশফিট সহ অন্যান্য অবকাঠামো এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট নেই। তাই আপাতত একটি শাটল ট্রেন দিয়ে লালমনিরহাট স্টেশন পর্যন্ত যাত্রী আনা নেয়া করা হবে।' আদিতমারী স্টেশনে ট্রেনটি না থামার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘স্টপেজের বিষয়টা মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর রেল ভবনের মাধ্যমে নির্দেশ আসে। এখানে আপাতত আমাদের কিছু করার নেই।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গোরপোতা ও তিনবিঘা করিডোর পরদির্শনে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুড়িমারী থেকে সরাসরি রাজধানী ঢাকায় চলাচলের জন্য একটি আন্তঃনগর ট্রেন চালুর প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ১৬ জুন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক লালমনিরহাটে এসে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। 

এরপর ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন  লালমনিরহাটে এসে বলেন, ‘বুড়িমারী-ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুত চালু করা হবে। প্রতিশ্রুতি মতে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর বুড়িমারী থেকে রাজধানী ঢাকা রুটে আন্তঃনগর ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

মন্তব্য করুন


 

Link copied