আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫ ● ১১ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

তদন্ত হবে আড়ি পাতার

রাজনৈতিক সরকার এ ব্যবস্থা ধরে রাখতে চায়
তদন্ত হবে আড়ি পাতার

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

সমস্যা বাড়ছে পাটপণ্য রপ্তানিতে

যাত্রীর চাপ বাড়ছে নৌপথে

ছুটি শুরুর আগেই লঞ্চের ৯৫ শতাংশ টিকেট শেষ

বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫, বিকাল ০৬:০৩

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  পদ্মা সেতু চালুর আগে ঢাকা ও বরিশাল প্রান্ত থেকে মোট ১৪টি লঞ্চ প্রতিদিন যাত্রী পারাপার করতো। সেতু চালুর পর যাত্রী সংকটে মাত্র চারটি লঞ্চ দুই দিক থেকে যাত্রী পরিবহন করে। তারপরও যাত্রী সংকট ছিল ব্যাপক। তবে আসন্ন ঈদুল ফিতরকে ঘিরে ভিন্নরূপ দেখা গেছে বরিশাল নদী বন্দরে। 

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছুটি শুরুর আগেই প্রায় ৯৫ শতাংশ টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। ফিরতি টিকেটেরও চাহিদা বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে- ডেকের যাত্রীও লাভের মুখ দেখাবে লঞ্চ মালিকদের।

বরিশাল নদী বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, পাঁচটি লঞ্চ নোঙর করা। প্রতিটি লঞ্চেই ধোয়া-মোছা আর সাজসজ্জার কাজ চলছে। ছুটিতে থাকা স্টাফদের তাগিদ দিয়ে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) থেকেই ঢাকা-বরিশাল রুটে লঞ্চের বিশেষ সার্ভিস চালু হবে। স্পেশাল সার্ভিসের মধ্য দিয়ে এই রুটে যুক্ত হচ্ছে এক হাজার যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন নতুন লঞ্চ এমভি এমখান-৭।

 

এমভি মানামী লঞ্চের স্টাফ প্রান্ত বলেন, কয়েকদিনের চেষ্টায় পুরো লঞ্চটিকে আমরা নতুন রূপ দিয়েছি। বিভিন্ন স্থানে রঙ করা হয়েছে, কেবিনগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষ্যে যাত্রীদের সবচেয়ে ভালো সেবা দিতে আমাদের এই প্রস্তুতি।

মনির হোসেন নামে আরেক স্টাফ বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর সারা বছরই যাত্রী সংকট থাকে। ঈদে ও কোরবানিতে কিছু যাত্রী হয়। যদিও গতকালকের ট্রিপে আশানুরুপ যাত্রী হয়নি, তবে কাউন্টার থেকে যা জানানো হয়েছে তাতে ঈদের ছুটি শুরু হলে ভিড় বাড়বে।

যে কারণে নৌপথে যাত্রীরা

বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হয়েছে স্পেশাল সার্ভিসসহ বরিশাল-ঢাকা রুটে এবার মোট ১৯টি বিলাসবহুল লঞ্চ যাত্রী সেবা দেবে। আরও ২-৩টি লঞ্চ ভায়া রুটে যাত্রী পরিবহন করবে। সমস্ত লঞ্চে যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে যাত্রীরা বলছেন- তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই সড়ক পথ ছেড়ে নৌপথে ঈদযাত্রা বেছে নিয়েছেন।

শাহনেওয়াজ নামে এক যাত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে লঞ্চে যাতায়াত খুবই আরামদায়ক। ঈদের সময় সড়কে দেখা যায় বাসের বেপরোয়া প্রতিযোগিতা। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ছুটে চলায় দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকে। আমরা ঈদের যাত্রায় ঝুঁকি নিতে চাই না দেখে লঞ্চে টিকেট নিয়েছি।

আরেক যাত্রী বেলায়েত হোসেন বলেন, আমার বন্ধুর জন্য লঞ্চের টিকেট নিতে এসেছি। বরিশাল অঞ্চলের সড়ক সরু। পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় এবং বাসগুলোর দ্রুত চালানোর প্রবণতায় মারাত্মক ঝুঁকি মনে হয়। তাছাড়া জায়গায় জায়গায় যানজট থাকায় লঞ্চই আমাদের কাছে পছন্দের।

ষাটোর্ধ্ব মনিরুল ইসলাম বলেন, পরিবারসহ লঞ্চে আমরা এসেছি। আজকে এসেছিলাম ফিরতি টিকেট নিতে। টিকেটের মূল্য কোনো অংশে কমায়নি লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। তারপরও সড়কের চেয়ে লঞ্চ নিরাপদ দেখে পরিবারসহ লঞ্চেই আমরা যাতায়াত করি।

৯৫ শতাংশ কেবিন বিক্রি শেষ

লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ১৯টি লঞ্চে বিভিন্ন মানের প্রায় পাঁচ হাজার কেবিন রয়েছে। এছাড়া প্রতিটি লঞ্চই ডেকে হাজারের অধিক যাত্রী বহন করতে পারে।

এমভি আওলাদ-১০ লঞ্চের ব্যবস্থাপক অভিজিৎ সরকার বলেন, যাত্রীদের সুবিধার্থে ১২ মার্চ থেকেই আমরা অগ্রিম টিকেট ছেড়েছি। ইতোমধ্যে কেবিনের প্রায় সব টিকেট বিক্রি হয়ে গেছে। আমরা লাভবান হবো কিনা তা বোঝা যাবে ভাসমান যাত্রী অর্থাৎ ডেকের যাত্রীদের ওপর নির্ভর করে।

এমভি মানামী লঞ্চের ব্যবস্থাপক জিয়াউল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ঈদ প্রস্তুতি আমাদের খুব ভালো। ইতোমধ্যে আসা এবং ফিরতি ট্রিপে কেবিন প্রায় ৯৫ শতাংশ বিক্রি হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত যাত্রীর চাপ না থাকলেও আগামী কয়েকদিনে বোঝা যাবে আমরা কেমন থাকবো।

এমভি সুন্দরবন লঞ্চের পরিচালক বলেন, এ বছর যাত্রীর চাপ হবে বলে প্রত্যাশা করছি। আমরা সবগুলো লঞ্চ প্রস্তুত রেখেছি। যদিও এখনো যাত্রী বাড়েনি। লম্বা ছুটি হওয়ায় ক্রমে ক্রমে যাত্রী আসবে বলে আশাবাদী।

সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপক আকতার হোসেন আকাজ বলেন, এ বছর যাত্রীর চাপ হবে বলে প্রত্যাশা করছি। আমরা সবগুলো লঞ্চ প্রস্তুত রেখেছি। যদিও এখনো যাত্রী বাড়েনি। লম্বা ছুটি হওয়ায় ক্রমে ক্রমে যাত্রী আসবে বলে আশাবাদী।

যা বলছে কর্তৃপক্ষ

বরিশাল নদী বন্দরে কন্ট্রোল রুম ও হেল্প ডেস্ক ইতোমধ্যে চালু করা হয়েছে। যাত্রী সেবায় মেডিকেল টিমও থাকবে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, গোয়েন্দাসহ অন্যান্য বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।

বরিশাল সদর নৌ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নৌ বন্দর এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

বরিশাল নদী বন্দরের কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে আমরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তায় আমরা কাজ করছি। আশা করছি নৌপথে এবারের ঈদ যাত্রা সুন্দর হবে।

মন্তব্য করুন


Link copied