নিউজ ডেস্ক: রংপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির বিদ্রোহী দুই প্রার্থীর প্রচারে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন দলের মনোনীত প্রার্থী মহানগর কমিটির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু। দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে তিনি নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্রোহী দুই প্রার্থী মনোনয়নপ্রত্যাশায় সমানতালে প্রচারে আছেন। মহানগর কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন ও রিটা রহমান দলের মনোনয়নের দাবিতে পালটা নির্বাচনি প্রচারে সরব থাকায় পরিস্থিতি উলটো হাওয়া বইছে।
এ বিভক্তির সুবিধা নিয়ে প্রচারের মাঠে এখন ভালো অবস্থানে আছেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মাহবুবার রহমান বেলাল। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। তিন নেতার পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দলের অনেকেই।
এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এখনো রংপুরের ছয়টি আসনে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেনি। শুধু বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি আসনে একক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।
রংপুরের-৩ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে নতুন করে মনোনয়নের প্রত্যাশায় নির্বাচনি প্রচারে এখন সক্রিয় আছেন দলটির রংপুর মহানগর কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন। তার পক্ষে যুবদলের মহানগর কমিটির আহ্বায়ক নুরুন-নবী চৌধুরী মিলন, সদস্য সচিব আতিকুল ইসলাম লেনিন ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক জহির আলম নয়নের নেতৃত্বে একটি অংশ এ নির্বাচনি প্রচারে মাঠে আছেন।
এদিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিটা রহমানও রংপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন প্রত্যাশা করে বলেন, দলের নীতিনির্ধারকরা রংপুর-৩ আসনের প্রার্থী সামসুজ্জামান সামুকে মনোনয়ন দিয়ে সঠিক কাজ করেননি। রিটা রহমান রংপুরে প্রতিদিন সভা-সমাবেশ করছেন, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় যোগাযোগ করছেন। তার বাবা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সদস্য মশিউর রহমান, যিনি যাদু মিয়া নামে সর্বাধিক পরিচিত। তার ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগিয়ে রিটা নির্বাচনের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামসুজ্জামান সামু বলেন, দলের ভেতর কোনো বিভাজন আছে বলে মনে করি না। কেউ কেউ মনোনয়ন প্রত্যাশা করে প্রচার চালাতে পারেন। সেটি তার গণতান্ত্রিক অধিকার। আমি দীর্ঘ সময় বিগত স্বৈরাচার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কারারুদ্ধ ছিলাম। পলাতক জীবনযাপন করেছি। সংকটের সময় তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছিলাম। নানা বিবেচনায় দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে।
মনোনয়নপ্রত্যাশী অ্যাডভোকেট মাহফুজ-উন-নবী ডন সাংবাদিকদের বলেন, আমি দলের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে যুক্ত আছি। বিগত পতিত সরকারের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছি। একাধিক মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছি। ১৭ বছরে দীর্ঘকাল নিজ বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছি। দলের পক্ষে বলা হয়েছে এটি প্রাথমিক মনোনয়ন। তাই দল পুনরায় বিবেচনা করে আমাকে যেন মনোনয়ন দেয় সেটাই আশা করছি। তা না হলের দলের সিদ্ধান্ত মেনে নেব। দলের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার জন্য কাজ করব।