বিশেষ প্রতিনিধি॥ জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় চলমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় সিগারেট, বিড়ি, গুল, জর্দাসহ সকল তামাকজাত দ্রব্য বিতরণ ও ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে ১৫টি তামাকবিরোধী সংগঠন।
প্রজ্ঞার কো অর্ডিনেটর মেহেদি হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, অতীতে প্রার্থী এবং কর্মীদের পক্ষ থেকে প্রচারণাসহ সাধারণ ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণে বিড়ি-সিগারেটসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য বিতরণ/ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে। বিগতসময়ের ধারাবাহিকতায় চলমান নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণাতেও তামাকপণ্যের ব্যবহার পরিলক্ষিত হলে তা জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির পাশাপাশি তরুণদের মধ্যে তামাকপণ্য সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করবে। সার্বিক বিবেচনায় তামাকের নেতিবাচক প্রভাব থেকে জনসাধারনের সুরক্ষায় চলমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণায় তামাকজাত দ্রব্য বিতরণ/ব্যবহার না করার বিষয়টি সকল প্রার্থীদের রাজনৈতিক অঙ্গিকার হিসাবে যুক্ত করা হলে তা জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী সাফল্য হিসাবে বিবেচিত হবে। এটি তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে বিবৃতিতে জানিয়েছে তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহ।
বিবৃতি প্রদানকারী সংগঠনগুলো হচ্ছে প্রজ্ঞা, ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, এইড ফাউন্ডেশন, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, ডরপ, ডাস, মানস, উন্নয়ন সমন্বয়, বিইআর, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটি, টিসিআরসি, বিসিসিপি, নারী মৈত্রী এবং স্বাস্থ সুরক্ষা ফাউন্ডেশন।
এদিকে প্রজ্ঞার একটি সার্ভেতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বর্তমানে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে। তামাক সেবনের ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কয়েক গুণ বেড়ে যায় এবং মুখ গহ্বর, ফুসফুস, খাদ্যনালীসহ প্রায় ২০ ধরনের ক্যানসার হয়। বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং ৩২ অনুচ্ছেদে মানুষের জীবনের অধিকার রক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া তামাকের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার স¤পূর্ণ নির্মূল করার ঘোষণা দেন। এ লক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।