উপজেলা প্রতিনিধি, ভূরুঙ্গামারী : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় একজনকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ শত টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত, আরেকজনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার গ্রামে অভিযান চালান। এ সময় মোঃ আসাদুল হক (৪০)–এর নিকট থেকে ২০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপ জন মিত্র ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮–এর ৩(১)(গ)/৩৫(৫) ধারায় আসামিকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ শত টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। আদালতের নির্দেশে আসামিকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় এবং দণ্ড কার্যকর করা হয়।
অন্যদিকে, একই দিনে পাইকেরছড়া ইউনিয়নের বেলদহ সরকারপাড়া গ্রামের মোঃ সাইদুল ইসলামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১.৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়, যার অবৈধ বাজারমূল্য প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এ ঘটনায় কুড়িগ্রাম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবু নাসের মোঃ কাজী নুরুন্নবী বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮–এর ৩৬(১) সারণির ১৯(ক) ধারায় ভূরুঙ্গামারী থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন,“কুড়িগ্রাম জেলা থেকে মাঝে মাঝে টহল দিলেও তা নিয়মিত নয়। পুলিশ ও বিজিবি যদি নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযান চালাতো, তাহলে এ এলাকা থেকে মাদক অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।”
তারা আরও বলেন, “মাদকের কারণে স্কুলপড়ুয়া ছাত্ররা নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। নেশার টাকার জন্য প্রথমে নিজের বাড়িতে, পরে অন্যের বাড়িতে চুরি করছে। অনেকে পরিবারের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে, সংসারে অশান্তি তৈরি করছে।”
স্থানীয়দের মতে, ভূরুঙ্গামারীর চারপাশে ভারত অবস্থিত। ভারত থেকে এসব মাদক বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আমাদের দেশে পাচার হয়—ভোটহাট, বাগভান্ডার, পাথরডুবি, বাঁশজানি, শিলখুড়ী, শালজোর, পাগলাহাটের চর, নতুনহাট আনন্দবাজার, বাবুরহাট, সোনাহাট, কাচাকাটা, জয়মনিরহাট, আন্ধারিঝার, মানিক কাজী ঘাটপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক আসা-যাওয়ার পথ রয়েছে।
তাদের দাবি, “এই চক্রে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে ছোট কারবারিরা সুযোগ পাবে না।”
পরিদর্শক আবু নাসের মোঃ কাজী নুরুন্নবী বলেন, “আমাদের জনবল সীমিত থাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। তবে সামর্থ্যের মধ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কোথাও মাদক কারবারির অবস্থান পাওয়া গেলে তথ্য দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।” পাশাপাশি বিজিবি এবং পুলিশ সহযোগিতা করবেন।