স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারী সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে মিল মালিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে। শহরের নূহা অটো রাইস মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ রকিব হাসান বৃহস্পতিবার(১ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে ওই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে ওই গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মমিদুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীকে কর্ম থেকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্ঠা আমজাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাদেরকে অব্যাহতি প্রদান করেন। ওই পত্র জারির পর বিকেলে ওই নেতাদের অনুপস্থিতিতে ট্রাক থেকে চাল ওঠানামার কাজ করেন শ্রমিকরা।
সৈয়দ রকিব হাসান অভিযোগ করে বলেন, আমি দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ দিয়ে আসছি। গত ২৯ নভেম্বর নীলফামারীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী আমি গত ৩০ নভেম্বর সকালে নীলফামারী সরকারি খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহ দিতে গেলে লেবার সর্দার প্রতি ৩০ কেজির বস্তা চাল ট্রাক থেকে নামাতে ১০টাকা করে চাঁদা দাবি করেন। আমি ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা (শ্রমিকরা) আমার চাল না নামিয়ে সারা রাত ট্রাকে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখেন। তিনি বলেন, সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজার মূল্য বেশি হওয়ার কারণে প্রতি কেজি চালে দুই টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে। তার ওপর লেবার সর্দারের চাঁদাবাজি চললে সরকারের ধান চাল সংগ্রহ অভিযান বাধাগ্রস্ত হবে।
এ বিষয়ে কথা বলতে নীলফামারী সরকারি খাদ্য গুদামের লেবার সর্দার মমিদুল ইসলাম সংবাদিকদের বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক নয়। আগে আমরা প্রতি বস্তা চাল (৩০ কেজি) ওঠা নামার জন্য নয়টাকা করে নিতাম। এবার আমরা ১০টাকা দাবি করলে চাল কল মালিকপক্ষ রাজি হয়নি। তারা ৬টাকা করে দিতে চেয়েছে। এ নিয়ে একটু ভুল বুঝাবুঝি হলেও পরে নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে মালামাল ওঠা নামার কাজ শুরু হয়।
নীলফামারী সরকারি খাদ্য গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা ও জেলা জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গুদাম শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে কর্ম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত তারা সেখানে কাজে যোগ দিতে পারবেন না।
নীলফামারী সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তফিউজ্জামান জুয়েল বলেন, ২০১৬ সাল থেকে খাদ্য গুদামে শ্রমিকদের মালামাল ওঠা নামার দরপত্র গ্রহন করা হয়নি। দৈনিক কাজের ভিত্তিতে সরকারিভাবে তাদেরকে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তারা বকসিস হিসেবে টাকা নেয়। একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে তারা বাক বিতন্ডায় জড়ালে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়।