আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ● ৩ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে অষ্টমীর স্নান করতে এসে মারা গেলেন পুরোহিত       বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ১১ জন নিহত       উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: রংপুরে ৩০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডোমার ও ডিমলায় মনোনয়ন জমা দিলেন ৩৫ জন       নীলফামারীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীকে গণধর্ষন -গ্রেপ্তার ৬      

 width=
 

রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার: আলোচনায় শিরীন শারমিন ও দীপু মনি

শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, বিকাল ০৬:৩৩

ডেস্ক: দেশে প্রথমবারের মতো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্পিকার পদে দুই নারীকে নির্বাচিত করে রেকর্ড সৃষ্টির কৃতিত্ব নিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। এবার চমক আসতে পারে রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার পদেও। আর তা হলে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং স্পিকারের মতো রাষ্ট্রের তিন গুরুত্বপূর্ণ পদে একসঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন নারীরা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতি পদে একজন নারীর নাম চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। তা হলে দেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি হবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

একই সঙ্গে স্পিকার পদটি শূন্য হলে ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর স্থলে কে আসতে পারেন সে আলোচনাও শুরু হয়েছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সংসদের স্পিকার পদে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পছন্দ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এদিকে সরকারি নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো দাবি করছে, রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার পদের মনোনয়ন একই সঙ্গে ঘোষণা করা হতে পারে। তবে এ পদে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। শেষ পর্যন্ত তার মত পরিবর্তন না হলে দুই নারীই হবেন পরবর্তী রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার।

আগামী ২৩ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতি হওয়ার সাংবিধানিক সুযোগ না থাকায় তার জায়গায় নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনের সেই প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফশিল অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। আর দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচন (ভোটগ্রহণ) অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি।

এ নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন জাতীয় সংসদ-সদস্যরা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হতে হলে সংসদ-সদস্য হতে হয় না। তবে জাতীয় সংসদ-সদস্যদের মধ্য থেকে যে কোনো একজনকে প্রস্তাবক এবং আর একজনকে সমর্থক হতে হবে।

মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয় দফায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কথা বর্তমান সংবিধানে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

আগামী ২৩ এপ্রিল তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে হবে ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মো. আবদুল হামিদ ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল দেশের ২০তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় মেয়াদে ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পান প্রবীণ এই রাজনীতিক।

মো. আবদুল হামিদই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করার পর নতুন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

এক্ষেত্রে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের বলে জানা গেছে। এর আগে তিনি মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্রী শিরীন শারমিন চৌধুরীর একই বিষয়ে রয়েছে পিএইচডি ডিগ্রি। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী শিরীন শারমিন চৌধুরীর এলএলবি এবং এলএলএম পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে।

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, কে হবেন আওয়ামী লীগের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী এটা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একক সিদ্ধান্তের বিষয়। এ নিয়ে দলের কারও কোনো মন্তব্য করার সুযোগ নেই।

এদিকে যেহেতু ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে সরকার ও আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে সবচেয়ে যোগ্য মনে করছে, তাই তার স্থলে কে পরবর্তী স্পিকার হতে পারেন-সে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো দাবি করছে, এ পদে এখন পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে পছন্দ আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডের।

গণভবনসংশ্লিষ্ট সূত্র স্বীকার করেছে, আওয়ামী লীগ হাইকমান্ডে দীপু মনির নাম বেশি আলোচনা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের জন্য মরণোত্তর একুশে পদকপ্রাপ্ত ও পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের এক সময়ের সাধারণ সম্পাদক এমএ ওয়াদুদের কন্যা দীপু মনি দেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালনের রেকর্ডও করেছেন তিনি।

চাঁদপুর থেকে নির্বাচিত এই সংসদ-সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে বিদেশ ভ্রমণ করে সমালোচিত হন। চাঁদপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণসংক্রান্ত দুর্নীতিতে পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে সমালোচিত হন তিনি। তারপরও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড মনে করছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের স্নাতকোত্তর দীপু মনি হতে পারেন জাতীয় সংসদের পরবর্তী স্পিকার। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পেলে তার স্পিকার হওয়ার পথ খুলে যেতে পারে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করছেন নারী রাজনীতিকরা। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে স্পিকার পদে দায়িত্ব পালনের রেকর্ড রয়েছে নারীর। সিঙ্গাপুরের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হালিমা ইয়াকুব। দেশটির ইতিহাসে তিনিই প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। এর আগে হালিমা দেশটির পার্লামেন্টে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিবেশী ভারতের বর্তমান প্রেসিডেন্ট দ্রোপদী মুর্মু। অন্যদিকে বিদ্যা দেবী ভান্ডারি নেপালের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। খবর-যুগান্তর

মন্তব্য করুন


 

Link copied