আর্কাইভ  সোমবার ● ১৬ জুন ২০২৫ ● ২ আষাঢ় ১৪৩২
আর্কাইভ   সোমবার ● ১৬ জুন ২০২৫
রাতভর ইরানি হামলায় ইসরাইলে নিহত ৪, আহত বহু

রাতভর ইরানি হামলায় ইসরাইলে নিহত ৪, আহত বহু

খামেনি তেহরানের বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন

খামেনি তেহরানের বাংকারে আশ্রয় নিয়েছেন

ইসরায়েলের হামলায় ইরানে অন্তত ৪০৬ জন নিহত, আহত ৬৫৪

ইসরায়েলের হামলায় ইরানে অন্তত ৪০৬ জন নিহত, আহত ৬৫৪

ইসরায়েলে আবারও মিসাইল ছুড়ল ইরান

ইসরায়েলে আবারও মিসাইল ছুড়ল ইরান

সারাদিন পানিতে থেকেও সুফল মিলছেনা তিস্তা পাড়ের জেলেদের!

সোমবার, ২৯ মার্চ ২০২১, বিকাল ০৫:০৯

Advertisement

হাসানুজ্জামান হাসান: সকাল থাকি সইনদ্যা (সন্ধ্যা) পর্যন্ত পানিত থাকি। দুপুরের রইদোত (রোদে) পানিত বোলান দিয়া মাছ ধরি। সকাল থাকি দোপর (দুপুর) পর্যন্ত মাছ ধরি দুই'শ টাকা বেচপার (বিক্রি) না পাই। ভারত সরকার পানিও ছাড়ি দেয় না! মাছ ও আইসেনা। হামরা এলা কি করি খাই বাহে! আগোত তিস্তা নদীতে মাছ ভাসি বেড়াইছে (ভেসে বেড়াত)। সেই মাছ বিক্রি করে ভালো ভাবে সংসার চলছিল। এভাবেই বলছিলেন তিস্তা পাড়ের (৪৮)বছর বয়সী জেলে হযরত আলী।

তিনি আরো বলেন,এ্যালা (এখন) সারাদিন ঘুরি ৩/৪ কেজি মাছ পাই। তা দিয়া ছাওয়া পোয়া(ছেলে-মেয়ে) ধরি সংসার চলে না। দিনে দিনে মাছ হারে যায়ছে।

হযরত আলীর মত তিস্তা পাড়ের জেলেরা বলেন, অনেকদিন থেকে ভালো মাছ পাইনা। ৩/৪ কেজি বৈরলী মাছ বিক্রি করে দিন চলে না। ৪/৫জন কাজ করি এইটুকু মাছ বিক্রি করে কি সংসার চলে! বন্যার সময় পানি থাকে, তখন কিছু মাছ পাওয়া যায়। পানি না থাকলে এভাবে মাছ কমে যাবে! তিস্তা চরাঞ্চলের জেলেদের না খেয়ে মরতে হবে। সরকার আমাদের জন্য বিকল্প কাজ দিক। না হলে পরিবার নিয়ে চলবো কেমনে?

লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় ৬৩টি চরাঞ্চল আছে। এসব চরাঞ্চলের জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। কিন্তু ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারে ফলে প্রতিবছর তিস্তাসহ কয়েকটি নদী পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। ফলে জেলে মাছ ধরতে না পেরে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।

জীবিকার জন্য এসব পরিবার নদীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করে কিছু মাছ শিকার করলেও তা দিয়ে চাল কেনার মতো টাকা জুটছে না। তাই জাল শুকিয়ে ঘরে এসে আবার পরের দিন ছুটে যান নদীর বুকে। অনেকেই পৈতৃক পেশা ছেড়ে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন।

মহিপুর তিস্তা চরের জেলে হযরত আলী বলেন, নদীতে পানি নেই, মাছও নেই। যতটুকু পানি আছে, সেটাতে মাছ পাওয়া যায় না। আগে প্রতিদিন মাছ ধরে আয় হতো একজনের ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। এখন পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে আমাদের সংসার চলে না।প্রচণ্ড রোদে মাছ ধরতে ঘুরে বেড়িয়েও আগের মতো জালে মাছ ধরা পড়ছেনা জেলেদের।

দিন শেষে ৩/৪ কেজি মাছ বিক্রি করে বাড়িতে ফিরতে হয় খালি হাতে। এনজিওর কাছে ঋণ নিয়ে চালাতে হচ্ছে সংসার। কিন্তু জেলেদের জন্য কিছুই করে না। তিস্তায় মাছ না পেয়ে পেশা বদলাচ্ছেন অনেক জেলে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, তিস্তায় পানি না থাকায় জেলেদের দূর্দিন। সরাদিন কাজ করেও মাছ পাচ্ছে। এখন যতটুকু মাছ পাচ্ছে তার চাহিদা বেশি।তিস্তায় যখন পানি থাকে, তখন কিছুটা মাছ পাওয়া যায়। বর্তমানে তিস্তা নদীতে পানি তেমন নেই। সরকার জেলেদের জন্য সুবিধা দিয়ে রাখেছে।কিন্তু তারা আসেন না।

মন্তব্য করুন


Link copied