নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ভারতে নিজের আধার কার্ড বানানোর মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব নিয়েছেন এমন একটি দাবি দেশের গণমাধ্যমগুলোর বরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হতে দেখা গেছে। দাবি করা হচ্ছে, জনাব জুয়েল আধারে তার নাম দিয়েছেন বিধান মল্লিক। বাবার নাম দিয়েছেন মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের ভারতীয় আধার কার্ড দাবিতে প্রচারিত তথ্য সঠিক নয় বরং একাধিক উপায়ে কথিত আধার কার্ডটি ভুয়া বলে নিশ্চিত হয়েছে রিউমর স্ক্যানার।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে কথিত আধার কার্ডটি বিশ্লেষণ করে রিউমর স্ক্যানার। কার্ডটির বাম দিকে শেখ জুয়েলের একটি ছবি রয়েছে। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষায় জুয়েলের নাম ‘বিধান মল্লিক’ লেখা রয়েছে। একই ভাবে পিতার নাম ‘মুদিন্দ্রনাথ মল্লিক’ লেখা রয়েছে। জন্মতারিখ দেওয়া হয়েছে ১ জানুয়ারি ১৯৫৯। আধার কার্ড নম্বর দেওয়া হয়েছে ৮৪৪২০৫৬৭৫৭২৬। কার্ডটির ডানে একটি কিউআর কোড বসানো আছে।
আধার কার্ডের নম্বরটি রিউমর স্ক্যানার এ সংক্রান্ত সরকারি অ্যাপে যাচাই করে দেখেছে। ভারতীয় একাধিক ফ্যাক্টচেকারের সহায়তায় যাচাই করে এই নম্বরের বিপরীতে কোনো ব্যক্তির তথ্য ডাটাবেজটিতে পাওয়া যায়নি৷ অর্থাৎ, এটি যে একটি ভুয়া আধার কার্ড তা নিশ্চিত।
আধার হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সনাক্তকরণ টুল। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক দৈনিক কার্যক্রমের জন্য পরিচয় প্রমাণ হিসাবে ভারতীয়দের এটি প্রয়োজন হয়। এই কার্ড পেতে আবেদনের সময় প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (ভোটারি আইডিসহ) হিসেবে, আপনার পরিচয় এবং ঠিকানার প্রমাণপত্র প্রয়োজন হয়ে থাকে। রিউমর স্ক্যানার কথিত আধার কার্ডটি বিশ্লেষণে দেশটির একাধিক রাজ্যের নাগরিকের কিছু আধার কার্ডের কপি সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেছে। এসব আধার কার্ডের কোনোটিতেই কার্ডের সামনের অংশে পিতার নাম উল্লেখ পাওয়া যায়নি। এসব কার্ডের অন্তত তিনটিতে স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে যে আধার কার্ডটি শুধু পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার হয়, নাগরিকত্বের জন্য নয়। অর্থাৎ, এটি অনেকটা বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন সনদের মতো।