আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫ ● ১১ ভাদ্র ১৪৩২
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় অবকাঠামোসহ এসিগুলো নষ্ট

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

উগ্রবাদ নিয়ে সতর্ক বিএনপি

তদন্ত হবে আড়ি পাতার

রাজনৈতিক সরকার এ ব্যবস্থা ধরে রাখতে চায়
তদন্ত হবে আড়ি পাতার

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিস আলমের শ্বশুর

ইউনূস-জিনপিং বৈঠকে বিশেষ নজর যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের
প্রধান উপদেষ্টা চীন যাচ্ছেন কাল

ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত কারণে তাৎপর্যপূর্ণ সফর

মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, দুপুর ০৪:৩৫

Advertisement Advertisement

নিউজ ডেস্ক:  কৌতূহল উসকে দিয়েছেন চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন নিজেই। তিনি বলেছেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে।’ সাংবাদিকরা জানতে চেয়েছেন, কী সেই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা? ওয়েনের জবাব, ‘ওয়েট অ্যান্ড সি। আমরা এখনো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি।’ কোনো চমক কি সত্যিই থাকছে, এ নিয়ে নানা আলোচনা। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন অবশ্য বলেছেন, কোনো চুক্তি হচ্ছে না। কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হবে। প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরাও। তাদের মতে, বাংলাদেশের জনগণ তো বটেই; যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মতো দেশগুলোও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ইউনূসের বৈঠকের প্রতি বিশেষ নজর রাখছে। ভূরাজনৈতিক ও কৌশলগত নানা কারণে এ সময়ে বৈঠকটির গুরুত্ব অনেক। কারণ, এক সপ্তাহ পরই ব্যাংককে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে দেখা হচ্ছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।

বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ায় যোগদানের লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল চীন যাচ্ছেন। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে এ সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বোয়াও ফোরামকে আগেও দাভস হিসাবে অভিহিত করা হয়। এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতারা এবং বিশ্বের জায়ান্ট ফার্মগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা এ ফোরামে যোগ দেবেন। তবে এ সফরকে প্রধান উপদেষ্টার প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়াও ফোরামের সাইডলাইনে বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। চীনের প্রেসিডেন্টের পাঠানো বিশেষ বিমানে প্রধান উপদেষ্টা হাইনান ও বেইজিং যাবেন।

চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান যুগান্তরকে বলেছেন, এ সফরকালে চীনের তরফে বাংলাদেশের কাছে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের ধরন বিষয়ে জানতে চাইতে পারে। বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়েও আলাপ-আলোচনা হবে। তিস্তার প্রস্তাবিত প্রকল্পের বিষয়ে চীন পর্যায়ক্রমে অর্থায়নে রাজি আছে। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রতিবেশী ভারতের উদ্বেগ থাকায় এ সফরে তেমন কিছু হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। চীনের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের ব্যাপারে বাংলাদেশ আরও শর্ত শিথিল চাইতে পারে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চীনের ইতিবাচক ও গঠনমূলক ভূমিকা চাইতে পারে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বাংলাদেশ কী কী করছে, সেটা বাংলাদেশের তরফে জানানো হতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ রোহিঙ্গার বর্তমান পরিস্থিতিতে সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক সম্মেলন করতে যাচ্ছে। এসব বিষয় চীনকে অবহিত করতে পারে।

চীনের রাষ্ট্রদূত যে ঘোষণা দেওয়ার কথা বলছেন, সেটা কী হতে পারে-জানতে চাইলে মাহবুব উজ জামান বলেন, এটা সম্ভবত বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্প প্রতিষ্ঠা কিংবা বড় কোনো বিনিয়োগের বিষয় হতে পারে। কারণ, চীন শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য বেশি নেই। তাই যৌথ উদ্যোগের বিকল্প নেই।

চীন বাংলাদেশের বড় অর্থনৈতিক সহযোগী দেশ। ফলে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিশেষ করে ব্রিজ, সম্মেলন কেন্দ্রসহ নানা প্রকল্পে চীন অর্থায়ন করছে। এ অর্থায়ন আগামী দিনেও যাতে অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ আলোচনা করবে। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার এবারের চীন সফরে কোনো চুক্তি হবে না। তবে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে। বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন রোববার সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের আসন্ন চীন সফর খুবই সফল, ফলপ্রসূ ও মাইলফলক হবে। এই সফর থেকে কিছু ঘোষণা করা হবে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব জসিম উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। আমরা এখনো আলোচনা করছি। দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করছে। কী ঘোষণা করা হবে-সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অপেক্ষা করুন এবং দেখুন। আমরা এখনো এটি নিয়ে কাজ করছি।’

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ৫০ বছরের মধ্যে এবারের প্রধান উপদেষ্টার সফর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে চীনের রাষ্ট্রদূত মনে করেন। প্রেস সচিব বলেন, সবচেয়ে বেশি ফোকাস করা হবে চীনের ফ্যাক্টরি বাংলাদেশে স্থানান্তরের প্রতি। বাংলাদেশকে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত করতে চাই। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিপ্লব সাধিত করতে চাই।

সাম্প্রতিক বিভিন্ন পর্যায়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় চীনের সমরাস্ত্র ক্রয়, চীনের এয়ারক্রাফট বিক্রিসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে চীনের সরকারের আলোচনা আশপাশের দেশগুলোর সম্পর্কের ওপর কী প্রভাব ফেলে, সেগুলোও কৌতূহলী করছে।

মন্তব্য করুন


Link copied