আর্কাইভ  শনিবার ● ৩ মে ২০২৫ ● ২০ বৈশাখ ১৪৩২
আর্কাইভ   শনিবার ● ৩ মে ২০২৫

তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতির ঘটনায় সরকারের হাত ছিলো না: প্রেস সচিব

শুক্রবার, ২ মে ২০২৫, দুপুর ০৪:০৪

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: গত ১৬ বছর বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ভূমিকা কেমন ছিলো তা মূল্যায়ন করতে এবং বিশ্ব দরবারে সত্য তুলে ধরতে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এখনকার মতো বাকস্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা আর কখনোই বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ভোগ করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমসহ মানুষের বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী। 

সম্প্রতি তিনটি গণমাধ্যমের তিনজন সংবাদকর্মীকে চাকরিচ্যুতির ঘটনায় সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ ছিলো না উল্লেখ করে প্রেস সচিব আরও বলেন, তাদের চাকুরিচ্যুতি নিজ নিজ অফিসের সিদ্ধান্ত, এখানে সরকারের ন্যূনতম ভূমিকাও ছিলো না। 

শুক্রবার (২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।  

জুলাইয়ে চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় যেসব সাংবাদিক শিক্ষার্থীদের পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে বিতর্কিত অবস্থান নিয়েছিলো তা তদন্ত করে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন শফিকুল আলম। 

তিনি বলেন,পার্শ্ববর্তী একটি দেশের মিডিয়া জুলাই বিপ্লবের পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্রমাগত মিথ্যাচার করে যাচ্ছে, উসকানিমূলক সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। একদিকে স্বৈরাচারের দোসররা অপতথ্য ছড়াচ্ছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সহায়তায় ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা সংবাদ প্রচার করে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের এই অপতৎপরতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে। তাই সংবাদের সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

বিপ্লবের পরবর্তী বাংলাদেশ গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ ধারণাপত্রের উপর বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকার সমালোচনাকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে সবাইকে মন খুলে সরকারের সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন। সমালোচনা হচ্ছেও। এমনকি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও সরকারের সমালোচনা করে দেদারসে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। নিকট অতীতে যা ছিলো অকল্পনীয় বিষয়।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনা অনুষ্ঠানগুলোতে দেখা গেছে অনেককেই শালীন-অশালীন নানা ভাষায় সরকার প্রধানকে আক্রমণ করেছেন। কিন্তু এসব সমালোচনার কারণে সরকার কোনো আলোচক বা চ্যানেলের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গোয়েন্দা সংস্থার কেউ কোনো চ্যানেলের ব্যবস্থাপককে ফোন করে হুমকি দেয়নি। অথচ অতীতে সরকারের লোকজনই ঠিক করে দিতেন টকশোগুলোতে আলোচক হিসেবে কারা আসবেন কিংবা কারা আসতে পারবেন না। এখন এ ধরনের চর্চা বন্ধ করা হয়েছে।

অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে কোনো তথ্যই আজকাল গোপন রাখা যায় না উল্লেখ করে ডেপুটি প্রেস সচিব বলেন, কোনো না কোনো মাধ্যমে তা ঠিকই প্রকাশ পেয়ে যায়। হোক তা মূলধারার গণমাধ্যম, কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সংবাদপত্রের পাতায়, টেলিভিশনের স্ক্রলে কিংবা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে সংবাদ হিসেবে প্রতিদিন আমাদের সামনে হাজির হচ্ছে হাজারো তথ্য। রাষ্ট্র বা অন্যান্য শক্তিশালী সত্তা বা ব্যক্তির কাছ থেকে প্রভাব বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই যদি একজন সাংবাদিক এই তথ্য আমাদের সরবরাহ করতে পারেন তবেই তাকে আমরা বলতে পারি মুক্ত সাংবাদিকতা। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য এই মুক্ত বা স্বাধীন সাংবাদিকতা অপরিহার্য একটি বিষয়।  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, মহাসচিব কাদেরঘনি চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনওয়াজসহ অনেকে। 

মন্তব্য করুন


Link copied