লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডভন্ড হাজার হাজার ঘরবাড়ী। এসময় বিভিন্ন ফসল ও বড় বড় গাছপালা ভেঙে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লালমনিরহাট সদর উপজেলা সহ তিন উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে এই কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। ঝড়ের তীব্র বাতাসের গতিতে ঘরবাড়ি, গাছপালা ও নানা স্থাপনা সহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) গভীররাতে লালমনিরহাটের প্রায় গোটা জেলায় এই কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে ঝড়ে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে কয়েকশ’ বড় বড় গাছ। ঝড়ো বাতাসে আম, লিচু, ভুট্টা, গম, ধান ও বাদাম সহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে গেছে। যে কারনে ওইসব স্থানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে। কালবৈশাখী ঝড়টি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যায়। যার ওই ইউনিয়ন গুলোতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। প্রায় ১ঘন্টা স্থায়ী হওয়া ঝড়ে মহাসড়কে বড় বড় গাছ পড়ে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বিশেষ করে কাকিনা চাপারহাট আঞ্চলিক সড়কে গাছ উপড়ে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এছাড়াও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ও পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নেও এই কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
তুষভান্ডার এলাকার শিমুল মিয়া জানান, রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রথমে হালকা বাতাস শুরু হয়। এরপর হঠাৎ করেই প্রবল গতির ঝড় হতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে তার বাড়ির আশে পাশে ঘরের ছাউনি উড়ে যায় এবং গাছপালা উপড়ে এবং ভেঙে পড়ে। ঝড়ে কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, ভোটমারী ও কাকিনা মদাতি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান, ঝড়ে ভুট্টা, পাট ও পাকা ধান ক্ষেতের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বাতাসে ক্ষেতের ধানের গাছ গুলো হেলে পড়ে সমস্ত ধান পড়ে গেছে।
তুষভান্ডার ইউনিয়নের বানীনগর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে হালকা বাতাস শুরু হয়, কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল ঝড়ে আমার পুরো বাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এই ঘর মেরামতের জন্য সাহায্য ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই।ক্ষেতের ফসলও সব নষ্ট হয়ে গেছে।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়হার। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বেশ কিছু ঘরবাড়ি এবং উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করে তালিকা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অর্থ ও মানবিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ঝড়ে বেশ কিছু স্থানে কয়েকজন আহত হলেও নিহত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি।