আর্কাইভ  রবিবার ● ১৫ জুন ২০২৫ ● ১ আষাঢ় ১৪৩২
আর্কাইভ   রবিবার ● ১৫ জুন ২০২৫
ইরানি হামলায় তছনছ ইসরায়েল, হতাহত দুই শতাধিক

ইরানি হামলায় তছনছ ইসরায়েল, হতাহত দুই শতাধিক

‘সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসে’: ইরানের হামলার বিবরণে ইসরায়েলি নারী

‘সবকিছু অন্ধকার হয়ে আসে’: ইরানের হামলার বিবরণে ইসরায়েলি নারী

ইরানের যে নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

ইরানের যে নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, নিখোঁজ ৩৫

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, নিখোঁজ ৩৫

আসিফ নজরুলের স্ট্যাটাস

আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, রাত ১২:৫২

Advertisement

নিউজ ডেস্ক: সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন বিষয়ক একটি ভুল সংবাদের জেরে তীব্র সমালোচনার শিকার হয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তার পরিবারের সদস্যদেরও এই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আজ তিনি তার ফেসবুক পেজে 'নিন্দা' শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যেখানে তিনি আইন মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধি এবং আইন প্রণয়ন ও জারির প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

আসিফ নজরুল তার পোস্টে উল্লেখ করেছেন যে, 'কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞায়ন বিষয়ক ভুল সংবাদের জেরে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।

এই ঝড়ের অন্যতম শিকার হয় আমার পরিবারের সদস্যরা। দু-একজন তাদের ধিক্কার দিতে থাকে, কীভাবে এই আইন করলাম আমি! তারা বলে, এটা তো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় করেছে! কিন্তু সমালোচকরা নাছোড়বান্দা! না, আইনটিতে তো লেখা আছে আইন মন্ত্রণালয়ের নাম।'

আসিফ নজরুল ব্যাখ্যা করেন, 'আমি জানি, এরকম বহু শিক্ষিত মানুষ আছে সমাজে। তাদের কাছে সবিনয়ে বলি, অন্য যে কোনো মন্ত্রণালয় যে অধ্যাদেশই করুক না কেন, তা জারি করতে হয় আইন মন্ত্রণালয়কে।

আমাদের রুলস্ অব বিজনেস অনুসারে এটাই বিধান। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে এটাই হয়। বাংলাদেশে এনবিআর নিয়ে যে আইনটা (অধ্যাদেশ) হয়েছে, তা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদিত হওয়ার পর এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে।
সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা নিয়ে যে আইন, তাও করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এটা জারি করতে হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়কে।' 

তিনি বলেন, 'অধ্যাদেশ আকারে যত আইন অতীতে হয়েছে সেগুলো আইন মন্ত্রণালয় জারি করেছে। ভবিষ্যতে যেসব অধ্যাদেশ হবে সেগুলোও আইন মন্ত্রণালয়কে জারি করতে হবে। এজন্য গেজেটের প্রথম পাতায় আইন মন্ত্রণালয়ের নামই থাকবে।

কিন্তু তার মানে এটি নয় যে আইন মন্ত্রণালয় আইনগুলো করেছে বা এটি আইনগুলোর প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়।'

'আইন মন্ত্রণালয়  নিজস্ব উদ্যোগে আইন করেছে কেবল এ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে। যেমন, দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধনী আইন বা উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনটি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। কিন্তু অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধিভুক্ত বিষয়ে আইন প্রণয়নের কোনো ক্ষমতা আইন মন্ত্রণালয়ের নেই। আছে শুধু জারি করার দায়িত্ব। এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা।' 

আসিফ নজরুল আক্ষেপ করে বলেন, 'আইন তো তবু কিছুটা খটমটে বিষয়। কিন্তু সাদামাটা, সহজবোধ্য যে কোনো বিষয়েও আমাকে নিন্দা করার প্রবণতা আছে সমাজের কিছু মানুষের মধ্যে। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা যদি আমাকে করা হয়, তাহলে যে কোনো ভালো কাজের  প্রশংসাও আমাকে কেন করা হয় না?'  

তিনি মনে করেন, 'সাবেক রাষ্ট্রপতি কীভাবে বিদেশে গেলেন এই দায় যদি স্বরাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দেওয়া হয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য যে স্থির রয়েছে এই প্রশংসাও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে না দিয়ে আমাকে দিতে হবে। কিন্তু এর কোনটিই আসলে করা ঠিক নয়।' 

তিনি বলেন, 'আমার কাজের জন্য নিন্দা/প্রশংসা আমাকে করবেন, অন্যর কাজের জন্য অন্যকে। যে কোনো কাজের সামগ্রিক দায়দায়িত্ব আমাদের গোটা সরকারের। কিন্তু যদি নির্দিষ্টভাবে একজন উপদেষ্টাকে দায়ী করা হয় তাহলে সেটি শুধু তার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত বিষয়ে করা উচিত।' 

আইন উপদেষ্টা তার পোস্টে বলেন, 'যারা নিন্দা করেন, কুৎসা রটান, এরমধ্যে হয়তো কোনো আনন্দ খুঁজে পান। কিন্তু এটা অন্য কাউকে এমন কষ্ট দিতে পারে, যা আপনি নিজে কখনও বহন করতে চাইবেন না। এটি মনে রাখা ভালো। আমি জানি ‘অপরের মুখ ম্লান ক’রে দেওয়া ছাড়া প্রিয় সাধ নেই’- এমন মানুষ আছে সমাজে। যারা এমন না, তাদের কাছে অনুরোধ, কারও নিন্দা করার আগে একটু জেনে নিন।'

সবশেষে তিনি তার স্ট্যাটাসটি শেষ করেন এই বলে, 'আল্লাহ আছেন, আমাদের সবাইকে একদিন জবাব দিতে হবে।'

মন্তব্য করুন


Link copied