নিউজ ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ বরাদ্দে আইনগত কোনো বাধা নেই বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন ১০১ জন আইনজীবী। বুধবার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩), বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, পতাকা এবং প্রতীক অর্ডার–১৭২ এর ধারা ৪ এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক বিধি–১৯৭২ এর বিধি ৩ এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুসারে এনসিপির শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পেতে কোন আইনগত বাধা নেই। ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অঙ্কিত আছে। উক্ত নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অঙ্কিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দুপাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকা-এর সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ। অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান কিন্তু এনসিপি 'ভাসমান শাপলা' প্রতীক হিসেবে চায়নি।
এতে আরও বলা হয়, শাপলা জাতীয় প্রতীকের চারটি স্বতন্ত্র উপাদানের একটি মাত্র। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) জাতীয় প্রতীকের চারটি উপাদানের একটি ‘ধানের শীষ’ বরাদ্দ দিয়েছে এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (জেএসডি) আরেকটি উপাদান ‘তারা’ প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে। সেহেতু নির্বাচন কমিশন এনসিপিকে ‘শাপলা’ বরাদ্দ দিতে পারে।
আত্মপ্রকাশের প্রায় চার মাস পর গত ২২ জুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের নির্বাচন কমিশনে আবেদন করে এনসিপি। দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলা, কলম ও মোবাইল চেয়েছে দলটি। নিবন্ধনের প্রাথমিক আবেদন জমা দিয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আশা করেন, দলীয় প্রতীক হিসেবে এনসিপিকে ‘শাপলা’ বরাদ্দ দেওয়া হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির নিবন্ধন আবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধন দ্রুত পাওয়ার আশা করে এনসিপি। প্রতীক হিসেবে শাপলা পাবে বলে আশা করে এনসিপি।’
আইনজীবীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’কে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ দিয়েছে এবং তৃণমূল বিএনপি নামের আরেকটি দলকে 'সোনালি আঁশ' বরাদ্দ দিয়েছে। সুতরাং ‘শাপলা’ জাতীয় ফুল হলেও দলের প্রতীক হিসেবে এনসিপির এটি পেতে আইনগত কোনো বাধা নেই।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদান ইতোমধ্যে দুইটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সুতরাং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণসাপেক্ষে এনসিপি'র নিবন্ধিত হবার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং প্রতীকের তালিকায় সংযোজনপূর্বক শাপলা প্রতীকটি এনসিপিকে বরাদ্দ দিবে বলে বিবৃতিদাতা আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করেন।