স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী॥ টানা বৃষ্টিতে পানির চাপে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নিতাই ইউনিয়নের বেলতলী ঘাটে চাঁড়ালকাঁটা নদীর উপর নির্মিত ১৪০ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটির সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়া সহ ব্রীজের গোড়ায় ব্লক সরে গিয়ে ব্যাপক ধস দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৪ আগষ্ট) বিকাল ৫ টার দিকে ব্রীজের দক্ষিন দিকে সংযোগ সড়কটি ধসে পড়ে গেলে বড় ধরনের ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়।
এতে ব্রীজের দুই পাশের ১০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা, উপজেলা প্রকৌশলী মাহামুদুল হাসান, কিশোরীগঞ্জ থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তাৎক্ষনিক সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে বালুর বস্তা ফেলে সড়কটি সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করা হয়। প্রায় চার ঘন্টা পর রাত ৯ টার দিকে সড়কটি দিয়ে মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শুক্রবার(১৫ আগষ্ট) সরেজমিনে নিতাই ইউনিয়নের মুশরুত পানিয়ালপুকুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বেলতলী ব্রীজের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে শতাধিক মানুষের আগ্রমন। এসময় দেখা যায় ব্রীজের দক্ষিন দিকে ভেঙ্গে যাওয়া অংশে সাময়িক চলাচলের জন্য কিছু বালুর বস্তা ফেলে সড়কটি মানুষ ও যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। তবে ব্রীজের দক্ষিন পুর্ব কোনে ব্রীজের মোকায় বড় ধরনের ধস রয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, এর আগে ব্রীজের মোকার একই জায়গায় চার থেকে পাঁচবার একই অবস্থা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন না করার ফলে বর্ষাকালে বার বার সড়কটি ভেঙ্গে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তৎকালীন সরকারের সময় প্রায় তিনকোটি টাকা ব্যায় দেখিয়ে মশরুত পানিয়াল পুকুর গ্রামের বেলতলি ঘাটে চাঁড়ালকাঁটা নদীর উপর ১৪০ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি নির্মান করা হয়।
নিতাই মুশরুত পানিয়াল পুকুর গ্রামের বাসিন্দা রিপন মিয়া বলেন, এর আগেও একই জায়গায় তিন থেকে চারবার ভেঙ্গে গিয়ে এলাকার মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছিল। কালকের যে অবস্থা তাৎক্ষনিক বালুর বস্তা ফেলে দেয়ার কারনে বড় ধরনের দুর্ভোগ এড়ানো গেছে। ঘটনার সময় ব্রীজ পারপার হচ্ছিল যারা তারাও বড় দূর্ঘটনা থেকে রক্ষা হয়।
কাচারীপাড়া গ্রামের সিকান্দার আলী বলেন, যদি দ্রত ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক ও ব্রীজের মোকার ধসে যাওয়া অংশ মেরামতে প্রকল্প গ্রহন করা না হয় আর যদি আবার বৃষ্টি শুরু হয়। তাহলে এই এলাকার মানুষের ভাগ্যে মহা বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। কারন কালকের যে অবস্থা হয়েছিল ভাগ্য ভাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষনিক এসে দাড়িয়ে থেকে ব্যবস্থা নিয়েছে।
নিতাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোত্তাকিনুর রহমান আবু বলেন, ব্রীজের ধসে যাওয়া অংশ দ্রুত মেরামতের ব্যাবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা কওে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, নিতাই ইউনিয়নের বেলতলি ঘাঁটে চাঁড়ালকাঁটা নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি এখোনো ঝুঁকিপুন রয়েছে। টানা বৃষ্টি হলে আবারো সমস্যা হতে পাওে তাই বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। আশাকরি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা বলেন, কয়েকদিনের ভারী বর্ষনে চাঁড়ালকাঁটা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়া ও তীব্র স্রোতের কারনে ব্রীজটির দক্ষিন দিকের মোকা নিচ ধেকে ধসে যাওয়ায় সংযোগ সড়কটি আড়াআড়িভাবে ভেঙ্গে পড়েছিল। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ভেঙ্গেযাওয়া সড়কে বালুর বস্তা ফেলে সড়কটি মেরামত করে চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। ধসে যাওয়া অংশটুকু দ্রুত মেরামতের জন্য ডিসি স্যারকে অবহিত করেছি।