স্টাফরিপোর্টার,নীলফামারী ঢাকা থেকে॥ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন থেকে ‘আওয়ামী ক্যাডারদের’ অপসারণের দাবি জানিয়েছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নীলফামারী জেলার বিএনপির নবগঠিত কমিটির উদ্যোগে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ দাবি তোলেন।
তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কিন্তু আওয়ামী আমলের প্রশাসন দিয়ে তা সম্ভব নয়। তাই প্রশাসন থেকে আওয়ামী ক্যাডারদের অপসারণ করতে হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি মাঠ পর্যায়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগেরও আহ্বান জানান। বিগত ১৫ বছরে পুলিশ-প্রশাসন ছিল না, এরা ছিল আওয়ামী লীগের ক্যাডার বাহিনী। তাই নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আহ্বান তারা এগুলো দেখবে।
রিজভী আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ১৬ হাজার ৩৯৯ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ আওয়ামী লীগের দলীয় লোক। এরা যদি পোলিং, প্রিজাডিং অফিসার হয় তাহলে কি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব? এদের যোগ্যতাই ছিল তারা ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ করছে কিনা। তাই তাদেরকে প্রশাসন থেকে সরাতে হবে। আমরা চাই না বিএনপির লোকদের নেওয়া হোক। আমাদের দাবি, নিরপেক্ষ লোকদের নিয়োগ দেওয়া হোক।
আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে অবস্থান করে দেশের মধ্যে নাশকতার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তাদেরকে মিলিটারি ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তাহলে তারা আরও কত কাজ করছে?
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচনকে বাংলাদেশের জন্য অনুপযোগী আখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন এ দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। যারা এ দাবি করছে, তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সব মতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সব মতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকে। ছাত্র প্রতিনিধিরা থাকলেই শিক্ষাঙ্গনে গণতান্ত্রিক চর্চা টিকে থাকে, শিক্ষার পরিবেশ সুষ্ঠু থাকে।
এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও নীলফামারী-০১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, নীলফামারী জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক, সদস্য সচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল, যুগ্ম-আহবায়ক মোস্তফা প্রধান হক বাচ্চু, রিয়াজুল ইসলাম কালু, সদস্য আনিসুর রহমান কোকো, মোজাম্মেল হক, অধ্যক্ষ মানোয়ার হোসেন, আবু মো. সোয়েম, আক্তারুজ্জামান সুমন , রেদওয়ানুল হক বাবু, মুক্তার হোসেন, হারুন অর রশিদ খোকন, আকবর আলি খান, সৈয়দ আলী, মইনুল ইসলাম, শেফাউল জাহাঙ্গীর আলম শেফু সহ জেলা কমিটির সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
এসময় নীলফামারী-০১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেন, ছাত্রদল থেকে উঠে আসা বিএনপির ছোট ছোট বাচ্চাদের যে কর্মসূচি শুরু হয় স্কুল থেকে, সে রকম আজকে বিএনপির এই নীলফামারীর কমিটি হয়েছে। ছাত্রদল থেকে উঠে আসা ছাত্রদল, যুবদল করে আজকে তারা বিএনপি করে। তারা বিএনপির আহ্বায়ক হয়েছে, সদস্য সচিব হয়েছেন। এটাই রিয়াল বিএনপি। বিএনপির শক্তি এখানেই। এভাবে বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে এবং নীলফামারী বিএনপির দুর্গ হিসেবে বিবেচিত হবে।
নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মীর সেলিম ফারুক বলেন, নীলফামারী জেলা বিএনপির নবগঠিত কমিটি গঠিত হয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। এই কমিটির লক্ষ্য হবে দলকে আরও সুসংগঠিত করা, প্রত্যেকটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রামে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করা এবং জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকা। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমরা নীলফামারীকে বিএনপির দুর্গে পরিণত করবো।
নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব এ এইচ এম সাইফুল্লাহ রুবেল বলেন, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী পরামর্শে ও আমাদের অভিভাবক সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন দির্ক নির্দেশনায় নির্বাচনের আগে আমরা নীলফামারী জেলার ৬ উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড কমিটি গুলি যার অনেক পূর্বে মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেগুলি নতুন কমিটি দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। যেনো নতুন নেতৃত্বের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর যে ৩১ দফা দাবি রয়েছে তা আমরা প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে পৌছিয়ে দিতে পারি।