নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম শনিবার রংপুরে এসেছিলেন। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। রমেক হাসপাতাল পরিদর্শনকালে রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতাল চালুর প্রসঙ্গটি উঠে আসে। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, শিশু হাসপাতালে জনবল নিয়োগ, যন্ত্রপাতি সরবরাহ নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তাই আমরা হঠাৎ করে কিছু করতে পারব না। আমি ঢাকায় গিয়ে এটি চালুর বিষয়ে উদ্যোগ নেব। তার এ ধরনের কথায় হতাশ হয়েছেন রংপুরবাসী। কারণ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও রংপুরের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়নি। আধুনিক অবকাঠামো, সংকটাপন্ন রোগীর জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (আইসিইউ)-সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নির্মাণের প্রায় এত বছর পরও হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে শিশুদের উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রংপুর বিভাগের মানুষ। জানা গেছে, নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে পুরাতন সদর হাসপাতাল ক্যাম্পাসে প্রায় ২ একর জমির ওপর ‘১০০ শয্যাবিশিষ্ট রংপুর আধুনিক শিশু হাসপাতাল’-এর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ ভবনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিভিল সার্জনকে হস্তান্তর করে। তিন তলাবিশিষ্ট এ শিশু হাসপাতালে রয়েছে ইমার্জেন্সি, আউটডোর, চিকিৎসকদের চেম্বার, ল্যাব, অপারেশন থিয়েটার, ব্রোন ইউনিট, ওয়ার্ড ও কেবিন।
হাসপাতাল চত্বরেই সুপারিনটেনডেন্ট কোয়ার্টার, ডক্টরস কোয়াটার, স্টাফ অ্যান্ড নার্স কোয়ার্টার, ড্রাইভার কোয়ার্টার, বিদ্যুতের সাবস্টেশন স্থাপনের জন্য একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। হাসপাতাল চালুর আগে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ায় ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের উদ্যোগে ওই হাসপাতালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভবনে ‘করোনা ডেডিকেটেড আইসোলেশন হাসপাতাল’ হিসেবে চালু করে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে সংকটাপন্ন করোনা রোগীর চিকিৎসায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউর ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়। করোনার প্রকোপ কমে গেলে একপর্যায়ে রোগীশূন্য হয়ে পড়ে হাসপাতালটি। রংপুর সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, দ্বিতীয় দফায় করোনা প্রকোপ না থাকায় হাসপাতালটি ব্যবহার করা হয়নি। হাসপাতালটি চালুর বিষয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে।